তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়াসার গুলার জানিয়েছেন, সিরিয়ার সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছে তুরস্ক। দেশটিতে অবস্থান করা তুর্কি সেনা এখনই সরানো হচ্ছে না।
রয়টার্সকে দেয়া এক লিখিত সাক্ষাৎকারে গুলার জানান, সিরিয়ার প্রতিরক্ষা শক্তি বাড়াতে তুরস্ক বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। যদিও এসব পদক্ষেপের বিস্তারিত তিনি জানাননি। তিনি বলেন, আমরা সিরিয়ার প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সামরিক প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিচ্ছি।
সিরিয়ার নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তুরস্ক দেশটির ঘনিষ্ঠ মিত্রে পরিণত হয়েছে। অতীতে তুরস্কই এমন কিছু বিদ্রোহী গোষ্ঠীর পক্ষে ছিল যারা সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরিয়েছে।
তুরস্ক এরই মধ্যে যুদ্ধবিধ্বস্ত প্রতিবেশী দেশ সিরিয়াকে পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং সেখানে থাকা লাখো শরণার্থীকে দেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে। গত মাসে সিরিয়ার ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে আঙ্কারা।
এই প্রেক্ষাপটে তুরস্কের প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে সিরিয়ায় ইসরায়েল ও তুরস্কের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। ইসরায়েল ও তুরস্কের মধ্যে ভুলবশত সংঘর্ষ এড়াতে ‘ডি-কনফ্লিকশন’ (বিরোধ-নিরসন) সংক্রান্ত আলোচনা চলছে। তবে গুলার স্পষ্ট করে বলেছেন, এই আলোচনা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া নয়।
তুরস্কের মূল লক্ষ্য হচ্ছে সিরিয়ার ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষা, সন্ত্রাস নির্মূল এবং শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করা—বলেন গুলার।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে সিরিয়ায় ২০ হাজারের বেশি তুর্কি সেনা অবস্থান করছে। তবে এদের ফিরিয়ে নেওয়া বা স্থানান্তর করার বিষয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নেই।
তুরস্ক উত্তর সিরিয়ায় একাধিক সীমান্ত পেরিয়ে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অঞ্চল নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে এবং সেখানে সামরিক ঘাঁটি গড়ে তুলেছে। তুর্কি সেনারা সেখানে অবস্থান করবে যতদিন না- সিরিয়ায় পূর্ণ শান্তি ও স্থিতি ফিরে আসে, সন্ত্রাসের হুমকি পুরোপুরি দূর হয়, তুর্কি সীমান্ত নিরাপদ হয়, এবং দেশছাড়া মানুষের সম্মানজনক প্রত্যাবর্তন সম্ভব হয়।
ন্যাটো সদস্য তুরস্ক ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সামরিক অভিযান, বিশেষ করে গাজায় হামলা, নিয়ে তীব্র সমালোচনা করে আসছে।
তবে পরিস্থিতি জটিল না করে তুলতে ইসরায়েল ও তুরস্ক চুপিসারে একটি যোগাযোগ ও সমন্বয় কাঠামো গড়ে তোলার চেষ্টা করছে, যা ভবিষ্যতে যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘর্ষ ঠেকাতে সাহায্য করবে বলে আশাবাদ গুলারের।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল