প্রবৃত্তির দাসত্ব, লোভ-লালসা, হিংসা-বিদ্বেষসহ মনের পশুত্ব পরাভূত করার শিক্ষা নিয়ে আবারও এসেছে ঈদুল আজহা। মহান আত্মত্যাগ, আত্মসমর্পণ এবং নিজেকে উৎসর্গ করার মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে আগামী শনিবার ১০ জিলহজ বাংলাদেশে উদ্যাপিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। মুসলিম উম্মাহর বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। ধর্মীয় বিধান অনুসারে পশু কোরবানি করা হয় বলে ঈদুল আজহা ‘কোরবানির ঈদ’ নামে পরিচিত। এ ঈদে সামর্থ্য অনুযায়ী গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া কিনে কোরবানির মাধ্যমে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য অনেকেই গ্রামের বাড়িতে গেছেন। কোরবানির ঈদে পশু কেনা, তার যত্ন-পরিচর্যাতেই ঈদের মূল প্রস্তুতি ও আনন্দ। রাজধানীর অনেক কোরবানিদাতা পছন্দের পশুটি কিনে ফেলেছেন। অনেকে সুবিধামতো দামে পছন্দের পশুটি কেনার জন্য বিভিন্ন হাটে যাচ্ছেন।
আল্লাহতায়ালার প্রতি হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর অপার আনুগত্য ও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিজ পুত্রকে কোরবানি করতে উদ্যত হয়ে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের যে নিদর্শন স্থাপন করেছেন, তাতে সন্তুষ্ট হয়ে আল্লাহ রব্বুল আলামিন মুসলিম জাতির জন্য কোরবানি করা ওয়াজিব করে দিয়েছেন। মুসলিম জাতির পিতা হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর ঐতিহাসিক আত্মত্যাগ ও অনুপম আদর্শের প্রতীকী নিদর্শন হিসেবে হিজরি বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী প্রতি বছর ১০ জিলহজ মুসলিম বিশ্বে ঈদুল আজহা উদ্যাপিত হয়ে আসছে।
ইসলামের পরিভাষায় কোরবানি হলো- একমাত্র আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট সময়ে তাঁরই নামে নির্দিষ্ট পশুকে জবাই করা। ঈদুল আজহার অন্যতম শিক্ষা হচ্ছে- আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় মনের পশু অর্থাৎ ‘লোভ’ ও ‘কুপ্রবৃত্তি’কে পরিত্যাগ করা। তাই এ ঈদে ধনী ও সামর্থ্যবানরা পশু কোরবানি করলেও গরিবরাও সে আনন্দে সমান অংশীদার। জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল আজহার জামাত হবে সকাল সাড়ে ৭টায়। প্রতি বছরের মতো এবারও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত হবে সকাল ৭টায়। এরপর পর্যায়ক্রমে দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায়, তৃতীয় জামাত সকাল ৯টায়, চতুর্থ জামাত সকাল ১০টায়, পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে।