আগামী নির্বাচনে জনগণের রায় নিয়ে ক্ষমতায় গেলে প্রথম ছয় মাসে কী করবে তার একটা প্যাকেজ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে গতকাল দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
আগামীতে জনগণের ভোটে ক্ষমতায় গেলে আর্থসামাজিক উন্নয়ন, কর্মসংস্থান বৃদ্ধিসহ প্রথম ছয় মাস বা ১৮০ দিনে বিএনপি কী করবে, তার একটি রূপরেখা তুলে ধরেন তিনি।
১৮০ দিনের এ কর্মসূচিতে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থানসহ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য, অর্থনীতি, গ্রামীণ উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, তথ্যপ্রযুক্তি, শহীদের স্বীকৃতি, প্রবাসীকল্যাণ, পরিবেশ ও বনায়ন, নগর ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামো উন্নয়ন, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, বেসরকারি খাতের প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিতকরণ, কর্মসংস্থানমুখী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, সুনীল অর্থনীতিসহ নানামুখী উন্নয়ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে দলটি।
১৮০ দিনের এ অর্থনৈতিক কর্মপরিকল্পনায় আরও বলা হয়েছে, ঋণ ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধির জন্য দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার স্বার্থে সামঞ্জস্যপূর্ণ রাজস্ব কৌশল প্রণয়ন, কাঠামোগত সংস্কার এবং প্রতিষ্ঠান শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক, সমতাভিত্তিক টেকসই উন্নয়নের পথ গ্রহণ করা হবে।
বিএনপি ঋণের বোঝা কমাতে ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ বৃদ্ধির কৌশলও নির্ধারণ করেছে। সেজন্য ব্যয় অগ্রাধিকরণ ও দক্ষতা বৃদ্ধির কৌশল, স্বল্পমেয়াদি ঋণের ওপর নির্ভরতা হ্রাস, ঋণ-উন্নয়ন-বিনিময় কৌশল, অবৈধ ঋণ পর্যালোচনা ও বাতিলকরণ প্রক্রিয়া, রাজস্ব ব্যবস্থার যুগোপযোগীকরণ, কর কোড আধুনিকায়ন, প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি ব্যবস্থা, সবুজ করকাঠামো, কার্যকর ট্রান্সফার প্রাইসিং আইনের পাশাপাশি বাজেট প্রক্রিয়ার সংস্কার করবে বিএনপি।
আমীর খসরু বলেন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা, মানুষের আস্থা অর্জন এবং ভবিষ্যতের জন্য দৃঢ় ভিত্তি গড়তে প্রয়োজন স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক ও উদ্ভাবনী অর্থনৈতিক পরিকল্পনা। গতানুগতিকতা ছেড়ে সাহসী ও দূরদর্শী সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে। তাহলেই জাতির জন্য আশা, আস্থা ও পুনর্গঠনের দিগন্ত উন্মোচন হবে।
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিশ্বের অনেক দেশে রাজনৈতিক দল নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম ১০০ দিনে কী কী কাজ করবে, তার পরিকল্পনা প্রকাশ করে। জনগণের ক্ষমতায়নের দল হিসেবে বিএনপি বাংলাদেশে এমন একটি বাস্তবসম্মত সংস্কৃতি প্রবর্তন করতে চায়। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে সরকার গঠনের পর প্রথম ১৮০ দিনের মধ্যে বিএনপির লক্ষ্য ও পরিকল্পনা নির্বাচনের আগেই নির্ধারণ করা হবে। একই সঙ্গে এ ছয় মাসের পরিকল্পনার ভিত্তিতে একটি অ্যাকশন-ওরিয়েন্টেড রোডম্যাপ প্রণয়ন করা হবে। বিভিন্ন খাতে বিএনপি কী কী পদক্ষেপ নেবে, সেগুলোও ওই রোডম্যাপে স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হবে।
আমীর খসরু বলেন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা, মানুষের আস্থা অর্জন এবং ভবিষ্যতের জন্য দৃঢ় ভিত্তি গড়তে প্রয়োজন স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক ও উদ্ভাবনী অর্থনৈতিক পরিকল্পনা। গতানুগতিকতা ছেড়ে সাহসী ও দূরদর্শী সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে। তাহলেই জাতির জন্য আশা, আস্থা ও পুনর্গঠনের দিগন্ত উন্মোচন হবে। নারীদের সার্বক্ষণিক নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে প্রাথমিকভাবে ঢাকার বিভিন্ন রুটে ‘শুধু নারী যাত্রী’ বাস চালু করা হবে। পরীক্ষামূলকভাবে সেখানে ড্রাইভার ও সহকারী হিসেবেও নারীরা থাকবেন। ট্রাফিক সমস্যার সমাধানে দেশবিদেশের বিশেষজ্ঞ সমন্বয়ে অগ্রাধিকারভিত্তিক কার্যক্রম নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম