বিজ্ঞানীরা বলছেন, নাচে পারদর্শী এক বিশেষ প্রজাতির মাকড়সার ডিএনএ-তেই লুকিয়ে আছে প্রাণিজগতে বিবর্তনের রহস্য। অস্ট্রেলিয়ার শতাধিক প্রজাতির পিকক মাকড়সা নিয়ে চলছে গভীর গবেষণা। ঝলমলে রং, দ্রুত নড়াচড়া আর পুরুষ মাকড়সার দৃষ্টিনন্দন নাচ তাদের আলাদা করেছে। গবেষকদের ধারণা, এর পেছনে আছে জেনেটিক কোডের রহস্যময় অংশ- ‘ডার্ক ডিএনএ’।
স্যাঙ্গার ইনস্টিটিউটের জোনাহ ওয়াকার জানান, এই ডার্ক ডিএনএ পিকক মাকড়সাকে দ্রুত নতুন প্রজাতিতে রূপান্তরিত হতে ও পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সাহায্য করে। পিনের মাথার মতো ছোট মাকড়সার পুরুষরা প্রজননের সময় উজ্জ্বল পেটের রং, গান আর নাচে সঙ্গীকে আকর্ষণ করে। ডিএনএ হলো বিভিন্ন অণুর লম্বা শৃঙ্খল। এর কিছু অংশ নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে, যেমন উচ্চতা বা চোখের রং। এগুলোকে জিন বলা হয়। তবে ডিএনএ-এর বেশির ভাগ অংশই জিন নয় এবং এখনো কেউ ঠিক জানে না এগুলো কী কাজ করে। গবেষকদের অনুমান, এই প্রচলিত ‘ডার্ক ডিএনএ’ পিকক মাকড়সার বৈচিত্র্যের জন্য দায়ী হতে পারে।
জোনাহ ওয়াকার ও ডা. জোয়ানা মেয়ার নেতৃত্বাধীন দল প্রতিটি প্রজাতির আচরণ, নড়াচড়া ও গান বিশ্লেষণ করে তা ডিএনএর সঙ্গে মিলিয়ে দেখেছেন। ফলাফলে দেখা গেছে, শুধু জিন নয়, জিনের মধ্যকার অংশ- ‘ডার্ক ডিএনএ’ও বৈচিত্র্যের জন্য দায়ী। পিকক মাকড়সার ডার্ক ডিএনএ মানুষের তুলনায় প্রায় তিন গুণ বেশি। ‘আর্থ বায়োজিনোম প্রজেক্ট’-এর গবেষকেরা ইতোমধ্যে ৩ হাজার প্রজাতির ডিএনএ ডিকোড করেছেন। আগামী দশকে ১৮ লাখ জীবের জিনোম উন্মোচনের লক্ষ্য তাদের। যা জীবজগতের বিবর্তন ও আন্তঃসম্পর্কের নতুন চিত্র তুলে ধরবে বলে আশা বিজ্ঞানীদের।