১৮০০ সালের মাঝামাঝি সময় পৃথিবীর বুকে প্রথম ‘গ্যাজেট’ শব্দটি চালু হয়। নাবিকরা সে সময় এমন যন্ত্র বা উপকরণ বোঝাতে শব্দটি ব্যবহার করতেন, যেগুলোর প্রকৃত নাম তারা মনে রাখতে পারতেন না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শব্দটির অর্থ পরিবর্তন হয়েছে। আর বিশ্বে ‘গ্যাজেট’ বলতে বোঝায়-এমন ছোট ছোট যন্ত্র বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস, যা ব্যবহারিক হলেও মজার বা আকর্ষণীয়ও মনে হয়।
গ্যাজেট বললেই সাধারণত স্মার্টওয়াচ, ইরিডার বা ওয়্যারলেস ইয়ারবাডস-এগুলোর চিত্রই মনে আসে। তবে শব্দটি আরও অনেক ধরনের ছোট ডিভাইসকে বোঝাতেও ব্যবহার করা যায়। যেমন : পোর্টেবল ব্লুটুথ স্পিকার, ফিটনেস ট্র্যাকার, স্মার্ট গ্লাসেস, পাওয়ার ব্যাংক, কিংবা নতুন নিনতেন্দো সুইচ ২-এর মতো হ্যান্ডহেল্ড গেম কনসোল। এমনকি ব্লাড প্রেসার মনিটর বা পালস অক্সিমিটারের মতো চিকিৎসাসংশ্লিষ্ট যন্ত্রও গ্যাজেটের তালিকায় পড়তে পারে। তাই ‘গ্যাজেট’ শব্দটি শুধু ভোক্তাপণ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়। অনেক সময় এগুলোকে আকর্ষণীয় বা কোনো নতুন ধরনের জিনিস হিসেবেও দেখা হয়। আবার সব স্মার্ট হোম ডিভাইসকে একইভাবে গ্যাজেট বলা যায় না। কিছু গ্যাজেটের চেয়ে বেশি গৃহস্থালি যন্ত্রপাতি হিসেবে বিবেচিত হয়। যেমন : স্মার্ট থার্মোস্ট্যাট ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ও শক্তি সাশ্রয় করে। যদিও এটি স্মার্ট প্রযুক্তিতে তৈরি, তবু এটি স্থায়ীভাবে দেয়ালে লাগানো থাকে, আকারে বড় ও মূলত একটি ঘরোয়া যন্ত্র হিসেবে কাজ করে। তাই একে গৃহস্থালি যন্ত্রপাতি বলা উপযুক্ত।
আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো-গ্যাজেট সাধারণত আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে। যেমন সাধারণ ব্লেডযুক্ত রেজারকে গ্যাজেট বলা হয় না, কিন্তু আবার ইলেকট্রিক শেভার এ তালিকার মধ্যে পড়ে। কারণ, গ্যাজেটের কাজই হলো প্রচলিত পদ্ধতির তুলনায় কাজকে আরও সহজ, দ্রুত ও সুবিধাজনক করে তোলা। এককথায় বলতে গেলে-প্রযুক্তির সাহায্যে কোনো নির্দিষ্ট কাজকে আরও কার্যকরভাবে সম্পন্ন করাই গ্যাজেটের মূল উদ্দেশ্য।
প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত যেমন পরিবর্তন হচ্ছে তেমনই বদলে যাচ্ছে গ্যাজেট শব্দটি নিয়ে মানুষের ধারণাও। আজকের গ্যাজেটের সংজ্ঞা ৫ বা ১০ বছর পর হয়তো সম্পূর্ণ ভিন্ন হয়ে যাবে।
তথ্যসূত্র : স্ল্যাশগিয়ার