মহাকাশে সফলভাবে অ্যান্টেনা মোতায়েন করল বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ভূ-অবজারভেশন স্যাটেলাইট ‘নিসার’। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) ও যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সংস্থা (নাসা)-র যৌথ উদ্যোগে তৈরি এই উপগ্রহটি ভবিষ্যতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
গত ৩০ জুলাই ২০২৫ সালে ভারতের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র থেকে ভারতের জিএসএলভি-এফ১৬ (এক ধরনের শক্তিশালী রকেট, যা ভারী উপগ্রহ বহনে সক্ষম) রকেটের মাধ্যমে নিসারকে মহাকাশে পাঠানো হয়। ২.৮ টন ওজনের এই স্যাটেলাইট নির্মাণে খরচ হয়েছে প্রায় ১.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
উপগ্রহটির মূল কাজ হলো পৃথিবীর পৃষ্ঠে ক্ষুদ্রতম পরিবর্তন (যেমন ভূমিকম্প, ভূমিধস, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, হিমবাহের গলন ও বন উজাড়) শনাক্ত করা। এই তথ্য দুর্যোগ পূর্বাভাস, অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা দেবে।
উৎক্ষেপনের ১৭ দিন পর, ১৫ আগস্ট স্যাটেলাইটটির ১২ মিটার ব্যাসের বিশাল অ্যান্টেনা মহাকাশে প্রসারিত হয়। সোনালি তারের জাল দিয়ে তৈরি এই অ্যান্টেনাটি এখন পর্যন্ত নিম্ন-কক্ষপথে (লো-আর্থ অরবিট) নাসার সবচেয়ে বড় অ্যান্টেনা। এটি মাইক্রোওয়েভ সিগন্যাল পাঠিয়ে পৃথিবীর মাটি, বন, বরফ ও মেঘের ভেতর দিয়েও তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে।
নিসারের দুটি রাডার সিস্টেম—নাসার এল-ব্যান্ড ও ইসরোর এস-ব্যান্ড—একসঙ্গে কাজ করবে। এর ফলে উদ্ভিদ, আর্দ্রতা ও বরফের সূক্ষ্ম পরিবর্তনও সহজে ধরা সম্ভব হবে। প্রতি ১২ দিন অন্তর এটি পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি ভূমি ও বরফ আচ্ছাদিত অংশের ছবি তুলতে পারবে। এতে বিজ্ঞানীরা ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি করতে পারবেন, যা প্রাকৃতিক দুর্যোগ পূর্বাভাস ও কৃষি, নগর পরিকল্পনা ও পরিবেশ সংরক্ষণে বড় ভূমিকা রাখবে।
নাসার মহাকাশবিজ্ঞান প্রধান নিকি ফক্স বলেন, এই স্যাটেলাইট পৃথিবী অধ্যয়নের ধরন পাল্টে দেবে এবং দুর্যোগ ঘটার আগেই পূর্বাভাসে সাহায্য করবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল