দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুতে বেড়ে চলা সহিংস অপরাধ এবং সরকারবিরোধী ক্ষোভের মধ্যে প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তেকে কংগ্রেসের ভোটে পদচ্যুত করা হয়েছে। এটি তার বিরুদ্ধে প্রথম সফল অভিশংসন হলেও এর আগে মোট আটবার তাকে সরানোর চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে অনুষ্ঠিত ভোটে দেশটির একক কক্ষবিশিষ্ট সংসদের ১৩০ সদস্যের মধ্যে ১২৪ জন বলুয়ার্তের অপসারণের পক্ষে ভোট দেন। এর আগে, সংসদে চারটি আলাদা অভিশংসন প্রস্তাব উত্থাপন করা হয় এবং তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়, কিন্তু তিনি সংসদে হাজির হননি। এর ফলে কংগ্রেস সরাসরি ভোটাভুটিতে যায় এবং অভিশংসনের সিদ্ধান্ত নেয়। এই রাজনৈতিক অস্থিরতা চরমে ওঠে যখন ঘটনার কিছু ঘণ্টা আগেই রাজধানী লিমায় একটি কনসার্টে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে, যা জনমনে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দেয়।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে তৎকালীন প্রেসিডেন্টকে অপসারণের পর বলুয়ার্তে ক্ষমতায় আসেন। কিন্তু তার শাসনামলে খুন, চাঁদাবাজি ও সহিংস অপরাধ বাড়তে থাকে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত প্রায় ৬ হাজার ৪১টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, যা ২০১৭ সালের পর সর্বোচ্চ। একই সঙ্গে জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত চাঁদাবাজির অভিযোগ জমা পড়ে প্রায় ১৬ হাজার, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় যা ২৮ শতাংশ বেশি। এক সামরিক অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট বলুয়ার্তে অপরাধ বৃদ্ধির জন্য আংশিকভাবে অবৈধ অভিবাসীদের দায়ী করেন। তিনি বলেন, এই ধরনের অপরাধ দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে এবং সীমান্তের দুর্বল নিয়ন্ত্রণের কারণে অবৈধ অভিবাসনের মাধ্যমে তা আরও বিস্তৃত হয়েছে। অভিশংসনের আগে প্রধানমন্ত্রী এদুয়ার্দো আরানা সংসদে বলুয়ার্তের পক্ষ নিয়ে বলেন, এই প্রস্তাব সমস্যার সমাধান নয়, বরং তা আরও জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। তবে তার বক্তব্য কংগ্রেস সদস্যদের অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আনতে পারেনি। -রয়টার্স