কাঙ্ক্ষিত গ্রেড বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা না পাওয়ায় আবারও আন্দোলনে নামছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ নামে মোর্চা গঠন করে আগামী ৮ নভেম্বর থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনগুলো।
সহকারী শিক্ষকদের ৩ দফা দাবি হলো-১০ম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড সমস্যার সমাধান ও শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি।
দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের এই আন্দোলনে আছে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (কাশেম-শাহিন), বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (শাহিন-লিপি), সহকারী শিক্ষক ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদসহ অনেকগুলো প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন।
দীর্ঘদিন থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা ১০ম গ্রেডের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। তাদের কয়েক দফা আন্দোলনের পর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আপাতত ১১তম গ্রেড বাস্তবায়নের আশ্বাস দেয় এবং সে মতাবেক গত ৭ আগস্ট অর্থমন্ত্রণালয়ে ১১তম গ্রেডের প্রস্তাবনা পাঠায়। কিন্তু অর্থমন্ত্রণালয় তা বাস্তবায়ন না করে নব-গঠিত পে কমশনে পাঠায়। কিন্তু দুই মাস পার হলেও দাবি বস্তবায়ন না হওয়ায় শিক্ষকরা পে-কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে। বৈঠকে পে-কমিশন জানিয়ে দেয়, শিক্ষকদের গ্রেড পরিবর্তনের কাজ পে-কমিশনের এখতিয়ারভুক্ত নয়, এটা সার্ভিস কমিশনের কাজ। আগে পে-স্কেলের জন্য গঠিত কমিশন ছিল যৌথভাবে পে-কমিশন ও সার্ভিস কমিশন নিয়ে। কিন্তু এবারের কমিশন শুধুমাত্র পে-কমিশন।
পে-কমিশনের অপারগতার পর শিক্ষকরা আবারও তাদের আগের দাবি ১০ম গ্রেড ফিরে যায় এবং তা বস্তবায়নে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে।
জোটের কর্মসূচির বিষয়ে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, বারবার আশ্বাস দিয়ে কর্তৃপক্ষ আমাদের দাবি বাস্তবায়ন করছেন না। তাই আমরা আবারও আন্দোলনে নামতে বাধ্য হলাম।
বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, প্রাথমিকের ডিজি, সচিব ও উপদেষ্টা সহকারী শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়নে আন্তরিক হলেও অর্থমন্ত্রণালয় কোনো কারণ ছাড়াই কালক্ষেপণ করছে। শিক্ষকরা এবার আন্দোলনের মাধ্যমেই দাবি আদায় করবে।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খাইরুন নাহার লিপি বলেন, শিক্ষকরা ৩য় শ্রেণির কর্মচারীর অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে চায়। ৮ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান করে দাবি বাস্তবায়নের পাশাপাশি শিক্ষকরা শ্রেণি বৈষম্য থেকে মুক্তি পাবে।
সহকারী শিক্ষক ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের সমন্বক মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, নিয়োগ যোগ্যতা অনুযায়ীই আমরা সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড দাবি করছি। বারবার আমরা মন্ত্রণালয়ে এর যৌক্তিকতাও প্রমাণ করেছি।
১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের আরেক সমন্বয়ক মোহাম্মদ আনোয়ার উল্যা বলেন, বারবার প্রতারিত হওয়ায় শিক্ষকরা এখন রাজপথকেই বেছে নিয়েছেন। আশাকরি কর্তৃপক্ষ শিক্ষকদের পালস বুঝবেন। তিনি ৮ নভেম্বর সব শিক্ষকদের ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমবেত হওয়ার আহ্বান জানান।
সূত্র : বাংলানিউজ
বিডি প্রতিদিন/এমআই