সেন্টার ফর এনআরবি'র উদ্যোগে 'আসন্ন নির্বাচন, প্রবাসীদের অংশগ্রহণ ও আগামীর অর্থনীতি' শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এনআরবি সেন্টারের চেয়ারপার্সন এম এস সেকিল চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, অর্থনীতিবিদ, ব্যাংকার, সাংবাদিক ও ব্যবসায়ীরা অংশগ্রহণ করেন।
বক্তারা অর্থনীতির বিভিন্ন দিক ও ব্যবসা বাণিজ্যের বিভিন্ন সমস্যাবলি তুলে ধরেন। আগামী নির্বাচন ও প্রবাসীদের অংশগ্রহণের বিষয়ে উপস্থিত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন মতামত তুলে ধরেন। পাশাপাশি দেশের উন্নতির জন্য স্থায়ীভাবে টেকসই সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক নির্বাচনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের স্বার্থে নির্বাচিত সরকারের অধীন দীর্ঘকালীন নীতিমালার ওপর জোর দেন।
বক্তারা প্রবাসীদের ভোটাধিকার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা করেন এবং নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানান। তবে প্রবাসীদের অধিক হারে ভোটাধিকার প্রয়োগের ব্যাপারে পোস্টাল ব্যালট যথেষ্ট কার্যকর নয়, এ ব্যাপারে অনলাইন ভোট বা আগাম ভোট অথবা আরও কার্যকর কোনো পদ্ধতি নির্ধারণের আহ্বান জানান।
প্রবাসীদের প্রার্থিতার বিষয়ে সংবিধান ও আইন অনুযায়ী সরকারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান প্রবাসী নেতৃবৃন্দ। লুকোচুরি ও ধোঁয়াশার ফলে প্রবাসীরা বিভিন্ন সময়ে প্রতারিত হন বলে বক্তারা মতামত রাখেন।
গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর তার বক্তব্যে আর্থিক খাতের শৃঙ্খলা ফেরাতে তার গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরেন। তিনি জানান, ব্যাংকিং ব্যবস্থায় গ্রাহক যাতে প্রতারিত না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর। পাশাপাশি ব্যাংক একীভূত করার মাধ্যমে গ্রাহকের আর্থিক নিরাপত্তার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তিনি ব্যাংক মালিকদের ডিভিডেন্ড প্রদানে কড়াকড়ি ও কমকর্তাদের বোনাস প্রদানের ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলেন।
সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু বলেন, বিনিয়োগের স্বার্থে যথাশিগগিরই নির্বাচন আয়োজন করা প্রয়োজন। তিনি পিআর পদ্ধতির বিষয়টি জনগণের সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে মতামত দেন। তিনি ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বার্থে রাজনীতিবিদদের সহনশীল মনোভাব গ্রহণ করে নির্বাচন আয়োজনে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে সেকিল চৌধুরী বলেন, নির্বাচনের বিষয়ে রাজনীতিবিদরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। তবে তা যেন ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতির দিক বিবেচনা করে হয়। প্রবাসীদের ভোট প্রয়োগ ও প্রার্থীতা বিষয়ে তিনি সকল অস্পটতা দূরীকরণে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, গবেষণা সংস্থা এফএসডিএসের চেয়ারম্যান ও সাবেক শান্তিরক্ষী ফোর্স কমান্ডার মেজর জেনারেল (অব) ফজলে এলাহী আকবর, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও মিডিয়া সেলের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, গণ সংগতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকী, ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল হাই সরকার, সাবেক সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি নেতা জহিরুদ্দিন স্বপন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যন তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদী আমীন, নারী উদ্যোক্তা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাসরিন ফাতেমা আওয়াল, ব্যাংকার ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মান্নান, সাবেক আইজিপি আশরাফুল হুদা, এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মুনিরা শারমিন, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান, এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান লে. ক. (অব) হেলাল উদ্দিন আহমদ, মানবাধিকারকর্মী ও গুম বিষয়ক গবেষক নুর খান লিটন, বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক মনজুরুল ইসলাম, ইন্ডেন্টিং অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি এম এস সিদ্দিকী, ঢাকা বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট খুরশিদ মিয়া আলম, বিএনপির পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ ইসলাম, অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক পরিচালক খন্দকার ফজলে রশীদ, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ নুরুল আমীন।
আরও উপস্থিত ছিলেন এনআরবি সেন্টারের বোর্ড মেম্বার এবিএম মুস্তাক হোসেন, ঢাকা চেম্বারের সাবেক পরিচালক বশিরুল্লাহ ভূঁইয়া, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য জিয়াউল ইসলাম মুন্না, এনআরবি সেন্টার আমেরিকার সাপোর্ট গ্রুপের সদস্য সানওয়ার চৌধুরী,
এনআরবি সেন্টারের বোর্ড মেম্বার ও ঢাকা চেম্বারের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট সুয়েব চৌধুরী, বার কাউন্সিলের সাবেক সদস্য ও ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা খান, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও ২৪ প্রজন্ম সাদিয়া আফরিন (প্রাপ্তি) ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মো মুস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।
বিডি প্রতিদিন/কেএ