বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরুতে বিভিন্ন বয়সি শিক্ষার্থীরা রাস্তায় বিক্ষোভ করলেও এই আন্দোলনের শেষ দিকে সন্তানদের সঙ্গে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার প্রধান সড়কগুলোতে নেমে এসেছিলেন অভিভাবকরাও।
আন্দোলনটি তখন শুধু আর শিক্ষার্থীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। শিক্ষার্থীদের শুরু করা আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে অফিসগামী বাবা ও গৃহিণী মায়েদের মধ্যেও। অভিভাবকদের বেশির ভাগই সন্তানের নিরাপত্তার কথা ভেবে ঘরের বাইরে বেরিয়ে এলেও আন্দোলনের শেষের দিকে সন্তানের সঙ্গে স্লোগানে গলা মেলান বাবা-মায়েরাও। লাঠি, প্ল্যাকার্ড ও পানির বোতল হাতে মোড়ে মোড়ে দেখা যায় মমতাময়ী মায়েদের। সড়কে পুলিশের আক্রমণ থেকে সন্তানকে বাঁচাতে অনেক বাবা সে সময় ঢাল হয়ে পাশে দাঁড়ান।
আগস্টের উত্তাল সেই দিনগুলোতে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে দেখা যায়, ঘরকন্না ছেড়ে রাজপথের মিছিলে শামিল হন সাধারণ গৃহিণীরা। ’৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের পর দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি সময় পর দেশের সাধারণ মানুষকে এভাবে কোনো আন্দোলনে শামিল হতে দেখা যায়।
’২৪-এর কোটাবিরোধী আন্দোলনের শুরুতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হাতেগোনা কয়েকজন অভিভাববকে দেখা গেলেও আন্দোলন যত গড়িয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের অভিভাবকের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। গত বছরের ২ আগস্ট শুক্রবার বিকালে রাজধানীর মিরপুর ডিওএইচএসে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি এই আবাসিক এলাকায় বসবাসরত অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানসহ রাস্তায় নেমে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে মিছিল করেন। এই মিছিলে আরও ছিলেন এলাকার বয়স্ক নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন বয়সি নারী-পুরুষ।
এদিন দুপুরে রাজধানীর রামপুরা-বাড্ডা এলাকার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিলে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর সঙ্গে যোগ দেন তাদের মা-বাবা ও অভিভাবক। এই সময় আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অভিভাবকরাও ‘জাস্টিস জাস্টিস উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগানে গলা মেলান। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারেও সন্তানদের নিয়ে অভিভাবকদের একাত্মতা প্রকাশ করতে দেখা যায়। রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বর এলাকা, প্রগতি সরণি, বনশ্রীসহ আরও বেশ কিছু এলাকায় অভিভাবকদের সন্তানদের নিয়ে আন্দোলনে যোগ দিতে যায়।
লেখক : সিনিয়র রিপোর্টার, বাংলাদেশ প্রতিদিন।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ