গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে সে আলোকে সংবাদপত্রের প্রতিষ্ঠানের মালিকপক্ষদের সঙ্গে কথা বলে সাংবাদিকদের কল্যাণে কাজ করার আশ্বাস দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম।
মৃত্যুবরণকারী সাংবাদিক পরিবার ও অসুস্থ- অসচ্ছ্বল সাংবাদিকদের মধ্যে অনুদানের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আজ শনিবার রাজধানীতে তথ্য ভবনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে মাহফুজ আলম বলেন, সাংবাদিকদের নিয়মিত বেতন-ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকলে কল্যাণ অনুদান দেওয়ার হয়তো প্রয়োজন হতো না। গণমাধ্যম মালিক, সম্পাদক ও অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে কথা বলে সাংবাদিকতা ব্যবস্থাকে সাংবাদিকবান্ধব করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
উপদেষ্টা বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের কর্মপরিধি বাড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও আশ্বাস দেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য সচিব মাহবুবা ফারজানা। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের কল্যাণে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। গুজব ও অপপ্রচার মোকাবিলায় সাংবাদিকদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের স্বার্থ সংরক্ষণ করে গণমাধ্যমে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার করতে হবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্বের বক্তব্যে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, ৫ আগস্টের আগে এই সংস্থাটি ছিল অন্যরকম, এখন বর্তমানে তা পরিবর্তন হচ্ছে। আস্থার জায়গা হিসেবে গড়ে উঠেছে। আমরা এই সংস্থাটিকে শতভাগ স্বচ্ছ হিসেবে রাখতে চাই। চলতি রমজান মাসে সারা দেশের ১৫শ সাংবাদিকদের কাছে ইফতারসামগ্রীসহ খাদ্য প্যাকেজ উপহার বিতরণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রবীণ ও গুণী সাংবাদিদের কীভাবে পেনশনের তালিকায় আনা যায় সেদিকে কাজ করছে সরকার। আগামীতে যেন কোনো প্রবীণ সাংবাদিককে কষ্ট করতে না হয় সে বিষয় নিয়ে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট কাজ করছে। আমরা নতুন একটি উদ্যোগ নিয়েছি সেটা হচ্ছে ফেলোশিপ। অচিরেই গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে এবং চলতি বছরে ৫ জন সাংবাদিককে ফেলোশিপ দেওয়ার লক্ষ্যে প্রস্তুতি চলছে।
তিনি বলেন, সাংবাদিকদের আস্থার ঠিকানা ‘সংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট’ এর নিজস্ব কোনো ভবন নেই। এ জন্য নিজস্ব ভবন, নিজস্ব আয়ের সৃষ্টি ও বহুমুখী কল্যাণমূলক গড়ে তোলার লক্ষ্যে একটি জায়গা সরকার থেকে বরাদ্দ পাওয়ার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া, সাংবাদিক মুহাম্মদ খায়রুল বাশার, সাজিদ আরাফাত ও মীর মুশফিক আহসান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ৩৭৪ জন সাংবাদিক ও সাংবাদিক পরিবারের মধ্যে ১ কোটি ৯৩ লাখ ৯০ হাজার টাকার অনুদানের চেক দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে মৃত্যুবরণকারী সাংবাদিক পরিবার রয়েছে ১১টি। এছাড়া, অনুদানপ্রাপ্তদের মধ্যে বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত সাংবাদিক রয়েছেন ১৯২ জন।
এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি দ্বিতীয় কিস্তিতে ১২৭ জন সাংবাদিক ও মৃত্যুবরণকারী সাংবাদিক পরিবারকে ৮৯ লাখ টাকা দেওয়া হয়। ২০২৪ সালে ৩০ অক্টোবর প্রথম কিস্তিতে ঢাকাসহ সানাদেশে ৩৫০ জন সাংবাদিক ও তাদের পরিবারের মধ্যে ২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ