বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, ইরান ও অবৈধ ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েলের মধ্যে চলমান যুদ্ধ কেবল ভূ-রাজনৈতিক সংঘাত নয়; এটি ইনসাফ বনাম দখলদারিত্বের একটি স্পষ্ট রূপ। ইরান যে সাহসিকতায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, তা বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি আত্মমর্যাদাময় দৃষ্টান্ত। এটি কেবল ফিলিস্তিন নয়-সারা মুসলিম জাতির অস্তিত্ব ও আত্মরক্ষার লড়াই।
আজ শনিবার ঢাকায় দলীয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মাসিক কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভা পরিচালনা করেন মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ।
সভায় আন্তর্জাতিক ও দেশীয় সমসাময়িক পরিস্থিতি পর্যালোচনার পর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আগামী ২৭ জুন (শুক্রবার) “মুসলিম ভূখণ্ডে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে” দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দেওয়া হয়। এছাড়া ২৯ জুন (রবিবার) আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিকশা প্রতীকে মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীদের সাক্ষাৎ গ্রহণ ও প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনার দিন নির্ধারিত হয়।
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ইসলামী বিশ্বের সকল শক্তিকে এখন ঐক্যবদ্ধভাবে দখলদার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে তাদের আকাশপথ ইসরায়েলের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। এই মুহূর্তে দ্বিধাহীন ও আপসহীন ইনসাফের পক্ষে অবস্থান নেওয়া সময়ের জরুরি দাবি।
জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী শাসনের পুনরাবৃত্তি ও ভারতীয় আধিপত্যবাদ রোধে দেশের ইসলামী ও দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে ন্যূনতম আদর্শিক ঐক্য অপরিহার্য। অতীতে আমরা যেভাবে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থেকেছি, ভবিষ্যতেও সেই ঐক্য অটুট রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণের ধরন, প্রতীক বা জোট আলাদা হতে পারে, কিন্তু ভারতীয় আধিপত্য ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থানে কোনো আপসের সুযোগ নেই। ইনসাফভিত্তিক কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সকল ইসলামী শক্তিকে একটি যৌথ আদর্শিক প্ল্যাটফর্মে একত্র হতে হবে।
‘জুলাই সনদ’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঘোষিত সম্ভাব্য জাতীয় ঐক্যরূপরেখা একটি জবাবদিহিমূলক রাজনৈতিক সম্ভাবনার দ্বার খুলতে পারে। তবে তাতে ইসলামপন্থীদের যথাযথ স্বীকৃতি ও অংশগ্রহণ না থাকলে প্রকৃত জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠবে না, বরং স্থিতিশীলতা আরও সংকটাপন্ন হবে।
আওয়ামী লীগের বিষয়ে তিনি বলেন, পরাজিত ও জনবিচ্ছিন্ন আওয়ামী লীগ একটি ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে। এদের শাসনে দেশের স্বাধীনতা, ভোটাধিকার এবং ইসলামপন্থীদের অস্তিত্ব বারবার লাঞ্ছিত হয়েছে। শাপলা-গণহত্যা, জুলাই-আগস্ট গণহত্যাসহ গুম-খুন, দমন-পীড়ন, সন্ত্রাস ও নির্বাচনী ব্যবস্থার ধ্বংসের দায়ে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার সম্পন্ন করতে হবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, নায়েবে আমির মাওলানা রেজাউল করীম জালালী, মুফতী সাঈদ নূর, মাওলানা মুহিউদ্দীন রব্বানী, মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী, মাওলানা কোরবান আলী কাসেমী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আব্দুল আজীজ, মুফতী শরাফত হোসাইন, মাওলানা তোফাজ্জল হোসাইন মিয়াজী, মাওলানা শরীফ সাইদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, মাওলানা এনামুল হক মূসা, মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, মাওলানা মুহাম্মদ ফয়সাল, মাওলানা আবু সাঈদ নোমান, মুফতি ওজায়ের আমীন, মাওলানা নিয়ামতুল্লাহ, মাওলানা মুহসিনুল হাসান, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা জহিরুল ইসলাম, বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা হারুনুর রশীদ ভূঁইয়া, অফিস সম্পাদক মাওলানা রুহুল আমীন খান, আইন বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা শরীফ হোসাইন, সহ-প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা হাসান জুনাইদ, নির্বাহী সদস্য মাওলানা জসিম উদ্দীন, মাওলানা হোসাইন আহমদ, মাওলানা আব্দুন নুর, মাওলানা আব্দুস সোবহান, মাওলানা মুহসিন উদ্দীন বেলালী, মাওলানা আব্দুল মুমিন, মাওলানা মামুনুর রশীদ, মাওলানা লিয়াকত হোসাইন, মাওলানা আমজাদ হুসাইন, মাওলানা মঈনুল ইসলাম খন্দকার, মুফতি আজিজুল হক, হাফেজ শহীদুল ইসলাম, মাওলানা ওয়ালিউল্লাহ, মাওলানা আনোয়ার মাহমুদ, মাওলানা মোহাম্মদ আলী, মাওলানা রেজাউল করিম, মাওলানা ছানাউল্লাহ আমিনী, মাওলানা আনোয়ার হোসাইন রাজী ও মাওলানা রাকিবুল ইসলাম।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত