জাতিসংঘ মিশনে পুলিশের অপারেশনাল কাজে ব্যবহারের জন্য ৭৯টি যানবাহন কেনার প্রস্তাব দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ওই গাড়িগুলো কিনতে ব্যয় হবে প্রায় ১৬৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। পুলিশ বলছে, শান্তিরক্ষা মিশনের প্রয়োজনেই এই গাড়িগুলো কেনা দরকার।
সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরে পুলিশের শান্তি মিশন বাজেটে মোটরযান খাতে ১৬৭ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। ওই বরাদ্দ থেকে প্রস্তাবিত ৭৯টি গাড়ি কেনার জন্য ১৬৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের অনুমতি নিতে গত ৭ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয়। এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের জন্য এই গাড়িগুলো কেনার প্রস্তাব যায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো জানাচ্ছে, সরকারি ব্যয়ের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগের জন্য কৃচ্ছ্রসাধনের নীতি কিছুটা শিথিল হলেও অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও সরকারের স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের জন্য তা বহাল আছে। ওই নীতি অনুযায়ী সব ধরনের যানবাহন কেনা বাবদ বরাদ্দ থেকে অর্থ ব্যয় বন্ধ রয়েছে। তবে ১০ বছরের বেশি পুরোনো টিওঅ্যান্ডইভুক্ত যানবাহন প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের অনুমোদন নিয়ে ব্যয় করা যাবে।
গাড়ি কেনার যৌক্তিকতা তুলে ধরে পুলিশ জানিয়েছে, কভিড-১৯ অতিমারিসহ সরকারের অর্থনৈতিক কৃচ্ছ্র সাধন নীতির কারণে গত কয়েক বছরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের জন্য প্রয়োজনীয় যানবাহন কেনা সম্ভব হয়নি। প্রয়োজনীয় লজিস্টিক ছাড়া জাতিসংঘ মিশনে কর্মরত অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে তীব্র চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বাংলাদেশ পুলিশ। এ ছাড়া প্রস্তাবিত গাড়িগুলো জাতিসংঘ মিশনে ব্যবহার করে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সুযোগ রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, জাতিসংঘের চাহিদা অনুযায়ী শান্তিরক্ষা মিশনে মোতায়েনের জন্য ৭টি এফপিইউ (ফর্মড পুলিশ ইউনিট) পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাংলাদেশ। ১৯৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি এফপিইউ এর সঙ্গে এক প্লাটুন সোয়াত পাঠানো হলে- তাদের লজিস্টিক সাপোর্টের জন্য ৬৯টি যানবাহন প্রয়োজন। একই সঙ্গে বিদ্যমান কঙ্গো মিশনের পুরোনো অ্যাম্বুলেন্স, তিনটি জিপ, চারটি ট্রাক এবং একটি ফর্ক লিফট প্রতিস্থাপন করা প্রয়োজন। এ ছাড়া অনুমোদিত দরের চেয়ে আন্তর্জাতিক বাজারদর বেশি হওয়ায় গত অর্থবছরে একটি ওয়াটার ট্যাংকার ট্রাক কেনা সম্ভব হয়নি। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরে ৭৯টি গাড়ি কেনার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে অর্থ বিভাগে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এস এম হুমায়ুন কবির সরকার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পুলিশের কেনাকাটা পুলিশ করে- এর সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। আমাদের কাছে প্রস্তাব এলে, আমরা শুধু বাজেট ছাড়ের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চাই।