ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের প্রতিষ্ঠিত সূচনা ফাউন্ডেশন এবং তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনকে (সিআরআই) দেওয়া দান ও অনুদান-সংক্রান্ত নথি তলব করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সংস্থাটি জানায়, ২০১৬ ও ২০২৩ সালে এনবিআর থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে সূচনা ফাউন্ডেশনের আয়কর ও প্রতিষ্ঠানটির অনুকূলে দান বা অনুদানের আয়কর মওকুফ করা হয়েছিল। দুদক মূলত ওইসব নথিই তলব করেছে। রবিবার দুদক থেকে পাঠানো চিঠিতে গতকালকের মধ্যে নথি সরবরাহের অনুরোধ করেছিলেন সংস্থাটির উপপরিচালক মনিরুল ইসলাম। দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বলেন, অনুসন্ধানের স্বার্থে দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা যে কোনো নথি তলব করা অত্যন্ত স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। অনুসন্ধান টিম কাজের ধারাবাহিকতায় নথি তলব করে থাকতে পারেন। সূত্র জানায়, দুদকের চিঠিতে এসআরও নম্বর-৮৭-আইন/২০১৬ মূলে সূচনা ফাউন্ডেশনকে দান ও অনুদান প্রদানকারীর আয়কর হতে অব্যাহতি প্রদান সংক্রান্ত নথি (নোটশিটসহ) চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এসব নথি সংরক্ষণকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীর নাম, পিতার নাম, বয়স, পদবি বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা, মোবাইল নম্বরসহ বর্ণিত নথি সংরক্ষণকারী শাখার কর্মবণ্টন তালিকার সত্যায়িত ফটোকপি সরবরাহ করতে বলা হয়েছে। দুদকের চিঠিতে বলা হয়েছে, সূচনা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংকের করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা বা সিএসআর তহবিলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। একইভাবে সিআরআইর ট্রাস্টি সজীব ওয়াজেদ জয় ও শেখ হাসিনা পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় অর্থের ক্ষতিসাধনের অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি সূচনা ফাউন্ডেশনের কর অব্যাহতি সুবিধা বাতিল করে এনবিআর। ২০১৬ ও ২০২৩ সালে এনবিআরের পৃথক প্রজ্ঞাপনে অটিস্টিক বা অটিজম শিশুদের মান উন্নয়নে কাজ করা সূচনা ফাউন্ডেশনের আয়কর ও প্রতিষ্ঠানটির অনুকূলে যে কোনো দান বা অনুদান আয়কর মওকুফ করা হয়েছিল। গত ২০ মার্চ বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসভুক্ত ব্যাংকের সিএসআর খাত থেকে সূচনা ফাউন্ডেশনের নামে ৩৩ কোটি টাকা সহায়তার নামে আত্মসাতের অভিযোগে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।