ট্রাম্পের চড়া শুল্ক কার্যকর আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি খুব শিগগিরই কয়েকটি বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করতে যাচ্ছে এবং আগামী ৯ জুলাইয়ের মধ্যে অন্যান্য দেশকে নতুন শুল্কহার জানিয়ে দেওয়া হবে। আগামী ১ আগস্ট থেকে এসব শুল্ক কার্যকর হবে। স্থানীয় সময় গত রবিবার এসব কথা জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সূত্র : রয়টার্স।
নিউ জার্সিতে গলফ খেলে ওয়াশিংটন ফেরার পথে সাংবাদিকদের সঙ্গে এদিন আলাপ করেন ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, কয়েকটি দেশের সঙ্গে চুক্তি চূড়ান্তের পথে। একই সঙ্গে তিনি বলেন, যেসব দেশ চুক্তি করতে ব্যর্থ হবে, তাদের ওপর উচ্চহারে শুল্ক বসবে। এর আগে গত এপ্রিল মাসে ট্রাম্প ১০ শতাংশ-ভিত্তিক শুল্ক এবং ৫০ শতাংশ পর্যন্ত অতিরিক্ত শুল্ক ঘোষণা করেছিলেন। যদিও সেটি তৎক্ষণাৎ কার্যকর না করে ৯ জুলাই পর্যন্ত সময় দিয়েছিলেন। এখন নতুন সময়সীমা অনুযায়ী, উচ্চহারে শুল্ক কার্যকর হবে আগামী ১ আগস্ট থেকে। মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক বলেন, প্রেসিডেন্ট এখন শুল্কহার নির্ধারণ করছেন এবং যেসব দেশের সঙ্গে চুক্তি হচ্ছে না, তাদের চিঠি পাঠানো হবে।
ব্রিকসের জন্য হুঁশিয়ারি : ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে এক পোস্টে জানান, সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা থেকে ওই চিঠি পাঠানো শুরু হবে। অন্য একটি পোস্টে তিনি আরও কঠোর অবস্থান ঘোষণা করে জানান, ব্রিকস জোটের সঙ্গে সম্পর্ক গড়া দেশগুলোর ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা রয়েছে তার। প্রসঙ্গত, ব্রিকস জোটে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন, দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়াও নতুন সদস্য হিসেবে রয়েছে মিসর, ইথিওপিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। রবিবার ব্রিকস নেতারা গাজা ও ইরানে হামলার নিন্দা জানান এবং বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানে সংস্কারের আহ্বান জানিয়ে বলেন, উচ্চহারে শুল্ক বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য হুমকি।
ট্রাম্পের নতুন শুল্ক পরিকল্পনায় ব্রিকস দেশগুলোর সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনা ক্ষতিগ্রস্ত হবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
ছাড় নেই ছোট দেশগুলোরও : এদিকে, মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেছেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই বড় বড় বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা আসছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে অগ্রগতি হচ্ছে। তিনি আরও জানান, যেসব দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য অল্প, এমন শতাধিক ছোট দেশকেও শিগগির শুল্কবৃদ্ধির নোটিশ পাঠানো হবে।
হোয়াইট হাউসের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের প্রধান কেভিন হ্যাসেট বলেন, যেসব দেশ আন্তরিকভাবে আলোচনা করছে, তাদের জন্য সময়সীমা কিছুটা পেছাতে পারে। শেষ সিদ্ধান্ত নেবেন প্রেসিডেন্ট।
হোয়াইট হাউসের আরেক উপদেষ্টা স্টিফেন মিরান বলেন, ইউরোপ ও ভারতের সঙ্গে আলোচনা নিয়ে আমি ভালো খবর পাচ্ছি। যেসব দেশ ছাড় দিতে প্রস্তুত, তারা তুলনামূলক কম শুল্ক পাবে। মার্কিন বাণিজ্যঘাটতির ৯৫ শতাংশ ১৮টি প্রধান অংশীদার দেশের সঙ্গে তাদের সঙ্গেই মূল আলোচনা চলছে বলে জানান বেসেন্ট।