কুড়িগ্রামে রাত জেগে সীমান্ত পাহারা দেন স্থানীয় জনতা। পুশইনে ব্যর্থ হয় বিএসএফ। কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানান, নাগেশ্বরী উপজেলার কচাকাটা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের শুক্রবার রাতভর ফের পুশইনের চেষ্টার কথা শোনা যায়। এ খবর সীমান্তে ছড়িয়ে পড়লে সেখানে রাতভর চলে উত্তেজনা। একই সঙ্গে সেখানে এলাকাবাসী ও বিজিবি সতর্ক অবস্থানে থাকেন। পুশইন প্রতিরোধে সেখানে প্রায় ১ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকায় অনেক মানুষ লাইন ধরে রাতভর পাহারা দেন। শত শত মানুষ, বিজিবি এবং আনসার ভিডিপি সদস্যরা পুশইন ঠেকাতে কঠোর অবস্থান নেন। গত শুক্রবার রাতে কচাকাটা থানার কেদার ইউনিয়নের শোভারকুটি ও শিপেরহাট সীমান্তে এ পুশইন চেষ্টার ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার রাত ৮টা থেকে ভারতের আসাম রাজ্যের ধুবরী জেলার গোলকগঞ্জ থানার বিএসএফ সদস্যরা শোভারকুটি শিপেরহাট সীমান্তে দুটি পিকাপ ভ্যানে প্রায় ৫০ জনেরও অধিক নাগরিককে বাংলাদেশের ওই সীমান্তের সন্নিকটে ভারতের ফেইসকারকুটি গ্রামের একটি স্কুলে পুশইন করার প্রস্তুতি হিসেবে সেখানে একত্রিত করা হয়। এরপর বিএসএফ তাদের পুশ ইন করতে ওই সীমান্তের ভারতীয় লাইটগুলো অফ করে দিয়ে বাংলাদেশে পুশইনের চেষ্টা করে। কিন্তু এ খবর পাহারায় থাকা বিজিবি, আনসার ও স্থানীয় জনতা টের পেয়ে সীমান্তে কঠোর অবস্থান নেয়। বাংলাদেশ ও ভারতের এ সীমান্তে একদিকে বিজিবি অপরদিকে বিএসএফ অবস্থান নেয়। পরে শনিবার ভোরে বিএসএফ বিজিবির সদস্যদের সঙ্গে কয়েক দফা কাজ করতে চাইলে তা বিজিবি প্রত্যাখ্যান করলে অবশেষে তাদের পুশইন চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
কুড়িগ্রাম-২২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহাবুব উল হক জানান, রাতভর এ ধরনের খবরে বিজিবি এলার্ট থেকে আনসার সদস্যদের নিয়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করতে কঠোর অবস্থানে ছিল। ফলে পুশইন ব্যর্থ হয়। এখনো বিজিবি সদস্যরা সতর্কতার সঙ্গে ওই সীমান্তে অবস্থান নিয়েছেন। কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানান, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) নারী ও শিশুসহ ৯ বাংলাদেশিকে পুশইন করেছে। গতকাল সকাল ১০টার দিকে উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ভাগজোত বাজার এলাকা থেকে তাদের আটক করে বিজিবি।
শনিবার বিকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া-৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহবুব মুর্শেদ রহমান জানান, বাংলাদেশের অভ্যন্তর ভাগজোত এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পুশইন করেই তাদের পাঠানো হয়েছে। আটকদের অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলা দিয়ে দৌলতপুর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। আটকদের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী ও নাগেশ্বরী উপজেলায়। তারা হলেন- কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা গ্রামের মো. এনামুল হক (৪২), তার স্ত্রী মোছা. শেফালী খাতুন (৩৫), ছেলে মো. লিটন (১৭), মো. আবু বক্কর সিদ্দিক (১৪) ও মেয়ে মোছা. খুশি খাতুন (১১) এবং নাগেশ্বরী উপজেলা কুটিবামনডাংগা গ্রামের মো. সাইফুল ইসলাম (৬৫), তার স্ত্রী মোছা. রিমা (৫৫), মেয়ে মোছা. তাছলিমা (১৪), ছেলে মো. আবদুল হামিদ (৯)। তারা চার বছর আগে অবৈধভাবে ভারতে গিয়েছিলেন। বিজিবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুই পরিবারের নয়জন বাংলাদেশি দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চল্লিশপাড়া সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করে নিজ জেলায় যাওয়ার সময় ভাগজোত বাজার থেকে তাদের আটক করেন মহিষকুি ক্যাম্পের টহলরত বিজিবি সদস্যরা।