বাংলাদেশে পুরোপুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে আদানি পাওয়ার লিমিটেড। চার মাস আগে বকেয়া পরিশোধ না হওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নামিয়ে আনে আদানি পাওয়ার। এখন তারা বাংলাদেশে পূর্ণ সক্ষমতায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। গতকাল আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা ব্লুমবার্গকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বলেন, ‘আমরা আদানিকে নিয়মিত অর্থ পরিশোধ করছি এবং আমাদের চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাচ্ছি।’
তবে এ সময় পরিশোধিত অর্থের পরিমাণ বা পূর্বের বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে কি না রেজাউল করিম সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু জানাননি।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, আদানি দুই সপ্তাহের বেশ কয়েকদিন আগে থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়িয়েছে। এর আগে গত নভেম্বরে বকেয়া পরিশোধের সময়সীমা একাধিকবার পরিবর্তন হওয়ায় ভারতের ঝাড়খ রাজ্যের ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট কয়লাভত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি থেকে সরবরাহ অর্ধেকে নামিয়ে আনে আদানি। বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের কারণে বিল পরিশোধে বিলম্ব হওয়ায় ৩১ অক্টোবর আদানি বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নামিয়ে আনে। এর জেরে ১ নভেম্বর একটি ইউনিট বন্ধ হয়ে যায় এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি মাত্র ৪২ শতাংশ সক্ষমতায় পরিচালিত হতে থাকে। এরপর বাংলাদেশই আদানিকে অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহ চালিয়ে যেতে বলে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড জানায়, তারা আদানির বকেয়া পরিশোধের জন্য প্রতি মাসে ৮৫ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করে আসছে। তাই তারা এখন দ্বিতীয় ইউনিট থেকেও বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে বলেছে। গত ডিসেম্বরে আদানির একটি সূত্র বলেছে, আদানিকে প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলার বকেয়া পরিশোধ করতে হবে। তবে সেই সময় বিপিডির চেয়ারম্যান রেজাউল করিম জানান, প্রকৃত পরিশোধযোগ্য অর্থের পরিমাণ প্রায় ৬৫০ মিলিয়ন ডলার। বিদ্যুতের দাম কীভাবে নির্ধারণ করা হবে তা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যেই বিরোধ ছিল। ২০১৭ সালের চুক্তি অনুযায়ী বিদ্যুতের মূল্য দুটি সূচকের গড় থেকে নির্ধারিত হয়েছিল। তবে রয়টার্স বলছে, আদানির বিদ্যুৎ বাংলাদেশে সরবরাহ করা ভারতের অন্যান্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুতের মূল্য থেকে ৫৫ শতাংশ বেশি।