চীনের সহায়তায় পাকিস্তান সম্প্রতি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে বলে দাবি করেছেন ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়-সংশ্লিষ্ট এক গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান। সোমবার ভারতের ও আন্তর্জাতিক বেশ কিছু গণমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানানো হয়।
নিজ দেশের সীমান্তের ভেতরে থেকে একরাতের মধ্যে একাধিক যুদ্ধবিমান ভূপাতিতের ঘটনা বিশ্ব ইতিহাসে নজিরবিহীন। তাই আলোচনা শুরু হয় পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতা এবং হামলার সময় দেশটির ঘনিষ্ঠ মিত্র চীনের ভূমিকা নিয়ে।
ভারতের সেন্টার ফর জয়েন্ট ওয়ারফেয়ার স্টাডিজের মহাপরিচালক অশোক কুমার জানিয়েছেন, পাকিস্তানের স্যাটেলাইট ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে নতুন করে সাজিয়ে দেয় চীন। আর এ কারণেই ভারতের আকাশপথের প্রতিটি পদক্ষেপ সহজেই শনাক্ত করতে সক্ষম হয় পাকিস্তান।
এই শীর্ষ কর্মকর্তা আরও বলেন, চীন পাকিস্তানকে তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা রাডার পুনর্বিন্যাসেও সাহায্য করে, যাতে নজরে আসে ভারতীয় বিমান চলাচল।
গত ২২ এপ্রিল ভারতশাসিত কাশ্মীরে হামলার ঘটনার জেরে দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। এরপরেই পাকিস্তানের উপগ্রহ ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নতুন করে সাজিয়ে দেয় চীন।
কাশ্মীরে হামলার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের অনন্ত নয়টি স্থানে হামলা চালিয়েছিল ভারত। পাকিস্তান জানায়, ওই হামলায় তাদের ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। ক্ষতিগ্রস্ত হয় আবাসিক ভবন, মসজিদ ও একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র। হামলার তাৎক্ষণিক জবাবে তিনটি ফরাসি নির্মিত রাফায়েল ফাইটার জেটসহ প্রথমে পাঁচটি পরে আরও একটিসহ মোট ছয়টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করে পাকিস্তান।
ভারত এমন দাবি স্বীকার না করলেও, অস্বীকার করেনি। বরং যুদ্ধবিমান ভূপাতিতের দাবির ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ক্ষয়ক্ষতি যুদ্ধের অংশ বলে মন্তব্য করেন ভারতীয় বিমানবাহিনীর ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার জানান, হামলার রাতে পাকিস্তান চীনের তৈরি জে-১০সি যুদ্ধবিমান এবং পিএল-১৫ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে। চীনের এই পিএল-১৫ ক্ষেপণাস্ত্র প্রথমবারের মতো বাস্তব সংঘাতে ব্যবহৃত হলো। বেইজিংয়ে চীনা দূতাবাসের পক্ষ থেকে এখনো এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
ইসহাক দার আরও জানান, ভোর ৪টায় চীনা প্রতিনিধি দল ইসলামাবাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপস্থিত ছিলেন, যার নেতৃত্বে ছিলেন রাষ্ট্রদূত নিজেই। আমরা পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করি এবং তারা সন্তোষ প্রকাশ করেন।
তবে গত ১০ মে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ‘পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি’ হয় ভারত-পাকিস্তানের।
সূত্র : দ্য টেলিগ্রাফ, ব্লুমবার্গ, টাইমস অব ইন্ডিয়া, ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ