যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ মিয়ানমার দুর্ভিক্ষজনিত ভয়াবহ বিপর্যয়ের ঝুঁকিতে আছে। বিশেষ করে দেশটির রাখাইন রাজ্যে এই ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। এ বিষয়ে সতর্ক করে জরুরি ভিত্তিতে দেশটিতে খাদ্য সহায়তা পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের খাদ্য বিষয়ক সংস্থা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)।
সংস্থাটি বলছে, রাখাইনে প্রতিনিয়ত বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাদের জন্য খাদ্য সরবরাহ প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এসব বাস্তুচ্যুত মানুষের মধ্যে রয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম। যারা ২০১২ সালে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের সময় তাদের বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদ হয়েছে। এর মধ্যে ২০২১ সালে ভয়াবহ গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে দেশটি। তখন দেশটিতে ক্ষমতায় আসে সামরিক জান্তা। এরপর থেকে দেশটির ভঙ্গুর অর্থনীতি আরও বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। এ ছাড়া এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে দেশটিতে মানবিক সহায়তার প্রয়োজন আরও প্রকট হয়েছে। সামরিক সরকারের ব্লকেডের ফলে রাখাইনের মানবিক সংকট চরমে উঠেছে। দেশ থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে রাজ্যটি। এতে দিনদিন সেখানের অবস্থা আরও ভয়াবহ হচ্ছে। আশ্রয় শিবিরগুলোতে বাস করার বাসিন্দাদের অবস্থা বেশ করুণ। ২০ এপ্রিল ওহান তাও কি শিবিরের ৫০ বছর বয়সি এক ব্যক্তি তার স্ত্রী এবং দুই সন্তানের খাবারে কীটনাশক মিশিয়ে দেন। তিনি মারা যান, কিন্তু তার প্রতিবেশীদের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপে অন্যদের জীবন রক্ষা পায়। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি মেনে নিতে না পেরে এমন পথ বেছে নেন ওই ব্যক্তি। রোহিঙ্গাদের জন্য মিয়ানমারে এটিই সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির। রাখাইনের রাজধানী সিত্তের মহাসড়ক জুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে এই শিবির। খাদ্য সংকটে শিবিরে অবস্থানরত পরিবারগুলো ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। সিত্তে থেকে বিবিসির সঙ্গে কথা বলা চার ব্যক্তি এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। জুনেও সিত্তেতে বসবাসরত কয়েকটি পরিবার একই কথা জানায়।-বিবিসি
সেসময় বেশ কয়েকজন প্রাণ হারিয়েছেন বলেও জানানো হয়। আরাকান আর্মি এবং মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মধ্যকার সংঘাতের মধ্যে সম্প্রতি বাস্তুচ্যুত হওয়া দুই বৃদ্ধ খাদ্যের অভাবে আত্মহত্যা করেছেন বলে খবর মিলেছে।