ইরান তার ইতিহাসের সবচেয়ে তীব্র খরার কবলে পড়েছে। রাজধানী তেহরানে পানির উৎস দুই সপ্তাহের মধ্যে শুকিয়ে যেতে পারে। যা শহরটি থেকে মানুষকে স্থানান্তরের শঙ্কাও জাগাচ্ছে।
এ অবস্থা দেশটির স্থিতিশীলতা ও পারমাণবিক লক্ষ্যকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে, এবং বিশ্বমঞ্চে দুর্বল করে দিতে পারে। এমন মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয় ইনস্টিটিউট ফর ওয়াটার এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড হেলথের পরিচালক কাভে মাদানি।
তিনি বলেছেন, খরা পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ায় দেশটিকে 'পানি দেউলিয়া' করে দিতে পারে। যা দেশের কার্যক্রমকে প্রভাবিত করবে ও বিশ্বমঞ্চের অবস্থানকে দুর্বল করবে।
ইরান যদি তাদের নিজস্ব মতবাদে অটল থেকে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যেতে চায়, তাহলে তাদের প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহার করতে হবে। পানি না থাকলে দেশটির স্থিতিশীলতা কমে প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যাবে।
কাভে মাদানি এর আগেও ইরানের পরিবেশগত অব্যবস্থাপনার ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। তিনি বলেন, ইরানের এ পরিস্থিতি এক রাতেই তৈরি হয়নি। এই পরিস্থিতির জন্য বহু আগে থেকেই সরকারকে সতর্ক করা হয়েছিল।
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সতর্ক করেছেন, শীতের আগে বৃষ্টি না হলে তেহরানকে আংশিকভাবে খালি করার পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তিনি বাসিন্দাদের পানির ব্যবহার কমপক্ষে ২০ শতাংশ কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
রাজধানী তেহরানকে পানি সরবরাহ করা পাঁচটি প্রধান বাঁধের মধ্যে একটি ইতোমধ্যে শুকিয়ে গেছে। প্রধান জলাধার লাতিয়ান বাঁধে এখন ধারণক্ষমতার ১০ শতাংশেরও কম পানি রয়েছে। কারাজ বাঁধের অবস্থাও একই।
বাঁধটির ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ-আলি মোয়াল্লেম বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার বৃষ্টিপাত ৯২ শতাংশ কমেছে। বর্তমানে রিজার্ভারে মাত্র আট শতাংশ পানি রয়েছে, যা ব্যবহার অনুপযোগী।
ইরানজুড়ে পানি সংকট ও বিদ্যুৎ বিভ্রাট জনমনে ক্রমবর্ধমান ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। রাজধানী থেকে শুরু করে খুজেস্তান ও সিস্তান-বালুচিস্তানের গ্রাম পর্যন্ত, জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। যার প্রভাবে দৈনন্দিন জীবন-যাপন অসহনীয় হয়ে উঠেছে।
সূত্র: বিবিসি, ফক্স নিউজ
বিডি-প্রতিদিন/এমই