মৌলিক অধিকারের দাবিতে পাকিস্তানের শাহবাজ শরিফ সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র বিক্ষোভে সোমবার রক্ত ঝরলো পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফ্ফরাবাদে। স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, এই সহিংস সংঘর্ষে দু'জনের মৃত্যু হয়েছে এবং কমপক্ষে ২২ জন আহত হয়েছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ইসলামাবাদ আজাদ কাশ্মীরে হাজার অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে।
এনডিটিভি সূত্রে খবর, বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ পাক সেনা ও আইএসআই সমর্থিত মুসলিম কনফারেন্স-এর মদতপুষ্ট সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা সাধারণ মানুষের উপর গুলি চালিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলিতে বিশৃঙ্খলার ছবি স্পষ্ট। এক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, স্লোগানরত বিক্ষোভকারীদের ভিড়ের মধ্যে দিয়ে কিছু লোক ফাঁকা গুলি চালাচ্ছে এবং গাড়ির উপর উঠে দাপাদাপি করছে। অন্য একটি ভিডিওতে এক বিক্ষোভকারী গুলি চালানোর প্রমাণ হিসেবে এক মুঠো ব্যবহৃত বুলেট দেখাচ্ছেন।
'মৌলিক অধিকার অস্বীকারের' বিরুদ্ধে গত ২৪ ঘণ্টা ধরে আওয়ামি অ্যাকশন কমিটির নেতৃত্বে এই আজাদ কাশ্মীরে চলছে বিক্ষোভ। এর জেরে সমস্ত বাজার, দোকানপাট ও স্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে এবং পরিবহন পরিষেবাও স্তব্ধ হয়ে গেছে।
আন্দোলনকারীদের ৩৮টি দাবির মধ্যে অন্যতম হলো পাকিস্তানে বসবাসকারী কাশ্মীরি শরণার্থীদের জন্য সংরক্ষিত পাক-অধিকৃত কাশ্মীর বিধানসভার ১২টি আসন বাতিল করা। স্থানীয়দের দাবি, এই সংরক্ষণ আসলে প্রতিনিধিত্বমূলক শাসনব্যবস্থাকে দুর্বল করে।
এএসির নেতা শওকত নওয়াজ মীর প্রশাসনকে কড়া বার্তা দিয়ে বলেছেন, আমাদের এই আন্দোলন ৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমাদের জনগণকে যে মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে, তার জন্য। হয় অধিকার দিন, নয়তো জনগণের ক্রোধের মুখোমুখি হোন। তিনি এই ধর্মঘটকে প্ল্যান এ আখ্যা দিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তার মতে, জনগণের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেছে এবং তাদের হাতে 'প্ল্যান ডি'-এর মতো মারাত্মক বিকল্প রয়েছে।
বিক্ষোভ দমাতে ইসলামাবাদ শক্তি প্রদর্শনের পথ বেছে নিয়েছে। পাক সংবাদ সংস্থা ডন জানিয়েছে, ভারী অস্ত্রে সজ্জিত টহলদারি দল পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের বিভিন্ন শহরে 'ফ্ল্যাগ মার্চ' করেছে। প্রতিবেশী পাঞ্জাব প্রদেশ থেকে হাজার হাজার এবং রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে অতিরিক্ত ১ হাজার সেনা এই অঞ্চলে মোতায়েন করা হয়েছে। একই সঙ্গে, উত্তেজনা বাড়ার আশঙ্কায় সরকার এই অঞ্চলে ইন্টারনেট পরিষেবা সীমিত করে দিয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল