সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী উদযাপিত হলো ‘বিশ্ব হরমোন দিবস’। এবারে দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল- হরমোন যেহেতু গুরুত্বপূর্ণ, অতএব সচেতন হোন। ডায়াবেটিস, থাইরয়েড, পিসি ওএস, এরকম হরমোনজনিত সমস্যার সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিশেষ দিবস নির্ধারিত থাকলেও সব হরমোনকে কেন্দ্র করে একটি দিবস উদযাপনের আয়োজন সাম্প্রতিককালেই হয়েছে। হরমোনজনিত রোগের সংখ্যা কিন্তু সামগ্রিকভাবে প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনা, চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে সংযুক্ত করে সামষ্টিক পরিকল্পনার ঘাটতি ব্যাপক। তাই বিশ্বব্যাপী হরমোনজনিত রোগী, তাদের আত্মীয়স্বজন, চিকিৎসক থেকে শুরু করে অন্যান্য সেবা দানকারী জনগণ ও প্রতিষ্ঠান এবং নির্ধারকদের হরমোনজনিত রোগের ক্ষেত্রে বেশি করে সচেতন করা, পর্যাপ্ত চিকিৎসা কাঠামো তৈরি, অর্থ বরাদ্দ ও সুযোগসুবিধা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ইউরোপিয়ান সোসাইটি অব এন্ডোক্রাইনোলজি প্রথমত এ দিবসটি উদযাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করে, যা প্রধানত ইউরোপেই সীমাবদ্ধ ছিল। গত দুই বছর থেকে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও ২৪ এপ্রিল বিশ্ব হরমোন দিবস পালিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ এন্ডোক্রাইন সোসাইটিও অনুরূপ উদ্দেশ্য নিয়ে বাংলাদেশে দিবসটি উদযাপন করছে। দিবসটি উদযাপন করার গুরুত্ব কী?
হরমোনের গুরুত্ব বুঝলেই এর উত্তর পাওয়া যাবে। হরমোন দেহের বহু গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম পরিচালনায় ভূমিকা রাখে, যার মধ্যে রয়েছে : * শারীরিক বৃদ্ধি ও বিকাশ * বিপাকক্রিয়া * প্রজনন ক্ষমতা ও যৌন স্বাস্থ্য * মানসিক স্থিতি ও জ্ঞানীয় ক্ষমতা
হরমোন ভারসাম্যের ব্যাঘাত ঘটলে ডায়াবেটিস, থাইরয়েড সমস্যা, বন্ধ্যত্ব, স্থূলতা এবং আরও নানা জটিল রোগ দেখা দিতে পারে। বাংলাদেশে হরমোন বিশেষজ্ঞের সংখ্যা আগে খুবই কম থাকলেও দিনদিন এ সংখ্যা কিছু কিছু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সচেতনতামূলক সুপারিশ :
দিবসটি উপলক্ষে জনগণকে যেসব স্বাস্থ্যকর অভ্যাসে উৎসাহিত করা হয়েছিল :
১.পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ- যেমন : ভিটামিন ডি, আয়োডিন, ক্যালসিয়াম।
২. নিয়মিত পরিমিত ব্যায়াম সম্পাদন- যা হরমোনের ভারসাম্য রক্ষায় সহায়ক।
৩. পর্যাপ্ত ঘুম- হরমোন নিঃসরণের স্বাভাবিকতা বজায় রাখতে ঘুম অত্যন্ত জরুরি। প্রতিদিন ৭ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন।
৪. ক্ষতিকর রাসায়নিক থেকে দূরে থাকা- যেমন : প্লাস্টিক, পেস্টিসাইড ও প্রসেসড কেমিক্যালস। তাই অবহেলা না করে হরমোন নিয়ে আমাদের আরও বেশি সচেতন ও যত্নবান হতে হবে। এসব ক্ষেত্রে বাড়াতে হবে জনসচেতনতা। তাহলেই এসব দিবস হবে স্বার্থক ও পাবে পরিপূর্ণতা।
-ডা. শাহজাদা সেলিম, সহযোগী অধ্যাপক, এন্ডোক্রাইনোলোজি বিভাগ, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।