‘শাপলা’ ছাড়া অন্য ৫০টি প্রতীকের মধ্য থেকে যে কোনো একটি বেছে নিতে জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) আজকের দিন পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দলীয় প্রতীক হিসেবে শাপলা ছাড়া অন্য কোনো প্রতীক নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে জুলাই বিপ্লবীদের এ রাজনৈতিক দলটি। চিঠিতে শাপলা চেয়ে ইসির কাছে আজ আবারও আবেদন করবে এনসিপি। দলটির নেতারা আশা করছেন, তফসিলে না থাকা শাপলা প্রতীক দ্রুত তালিকাভুক্ত করে তাদের বরাদ্দ দেওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগ নেবে ইসি। এদিকে, ইসির সম্প্রতি প্রকাশিত গেজেটে শাপলা প্রতীক না থাকলেও এনসিপির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নতুনভাবে প্রতীকটি অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে- বলে যে খবর ছড়িয়েছে সে বিষয়ে কিছু জানেন না বলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানিয়েছেন এনসিপি নেতারা। এ বিষয়ে গতকাল নাটোরে দলের উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা মিডিয়ায় দেখতে পাচ্ছি, ইসি শাপলাকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়ায় যাচ্ছে। যদি এটা হয় তাহলে আমরা বলব, তাদের প্রতিষ্ঠানের স্বকীয়তা বা স্বাধীনতার যে অপব্যবহারের নমুনা আমরা দেখতে পাচ্ছিলাম, তারা সেটা থেকে বেরিয়ে এসে সঠিক পথে এগোচ্ছে। এরকম যদি হয় তাহলে আমরা অবশ্যই তাদের ধন্যবাদ জানাব।
এনসিপিকে শাপলা দিতে না চাওয়ার ইসির যে অবস্থান সেটিকে অযৌক্তিক মনে করছেন দলের নেতারা। এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব মুশফিক উস সালেহীন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ইসি শাপলা না দেওয়ার বিষয়ে যেসব যুক্তি উপস্থাপন করছে তার কোনোটিই যৌক্তিক নয়। এবি পার্টিকে ঈগল দেওয়া হয়েছে। যেটি বিমান বাহিনীর প্রতীক। জামায়াতকে দাঁড়িপাল্লা দেওয়া হয়েছে। যেটি আদালতের প্রতীক। ইসিকে আমরা শাপলার অনেক মডেল দেখিয়েছি যেগুলো জাতীয় প্রতীকের সঙ্গে মেলে না। কিন্তু রাজনৈতিক চাপে পড়ে তারা আমাদের সঙ্গে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে। আমাদের যৌক্তিক দাবি আদায়ে প্রয়োজনীয় সব রকম পথই আমরা ব্যবহার করব। আলোচনার টেবিলে শান্তিপূর্ণভাবে শাপলা না পেলে আমরা রাজপথে নামব। আরেক যুগ্ম সদস্য সচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দীন সিফাত বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এনসিপির নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় ইসি গভীর ও সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে তামাম দলিল-দস্তাবেজ যাচাইবাছাই করেছে। প্রত্যেক জেলা অফিসে গেছে। অনেক জায়গায় এমনকি আবশ্যকীয় ভোটার লিস্টের নাগরিকদের ফোন করে সংশ্লিষ্ট জেলা এনসিপি অফিসে আসতে বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় অফিসের দলিল থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠার পর থেকে সব রাজনৈতিক কাজের বিবরণ, ব্যাংক হিসাব, এমনকি মিটিং রেজল্যুশনও জমা দিতে হয়েছে। কোনো কোনো দলিল মিস হওয়ায় দ্বিতীয়বারও পাঠাতে হয়েছে। আমরা দেখিয়েছি শাপলা প্রতীক পেতে কোনো আইনি বাধা নেই। কিন্তু কমিশন শাপলাও দেবে না এবং কারণও ব্যাখ্যা করবে না।
তিনি বলেন, অন্যদিকে, জাতীয় লীগ নামের একটা সংগঠনকে নিবন্ধন দিতে যাচ্ছে একই কমিশন। সাংবাদিকদের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে- যে দলের কেন্দ্রীয় অফিসে সাংবাদিক দেখে তড়িঘড়ি টেপ দিয়ে দলের ব্যানার সাঁটিয়েছেন একজন। অফিস খুঁজে পেতেই বেগ পেতে হয়েছে তাকে। কেন্দ্রীয় অফিসে ঝুলছিল তালা। দেশের কোথাও এ দলের মিটিং-মিছিল বা রাজনৈতিক কার্যক্রম কেউ দেখেননি বলেই আমার অনুমান। ভোটার লিস্টের কথা তো বাদই দিলাম। এরকম দলও নিবন্ধন পেতে যাচ্ছে। এনসিপির প্রতি নির্বাচন কমিশনারের এমন পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ জরিপের সময় থেকেই চলছে।