ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথ ও আশপাশের এলাকায় রাজনৈতিক কর্মীদের ভিড় বাড়তে থাকে। গতকাল বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত শাহবাগ, পলাশী ও নীলক্ষেতে নেতা-কর্মীরা জমায়েত হতে থাকেন। রাত বাড়ার সঙ্গে ভিড়ও বাড়তে থাকে। এ নিয়ে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়।
উত্তেজনা নিরসনে সরকারের পক্ষ থেকে বিএনপি ও জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী এবং ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাদ আলী। এই তথ্য নিশ্চিত করেন বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা। সরকার উভয় পক্ষকেই বার্তা দিয়েছে, বহিরাগতরা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর হবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ গণমাধ্যমকে বলেন, আইন উপদেষ্টা এবং আরও দুই-একজন ফোন করেছিলেন। তারা উত্তেজনা কমাতে পরামর্শ দিয়েছেন। বিএনপি আশ্বস্ত করেছে, সংঘাতের আশঙ্কা নেই। দলের সংশ্লিষ্ট নেতা-কর্মীদের এ বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। জামায়াতের জ্যেষ্ঠ নেতারা সরকারের উপদেষ্টাদের সঙ্গে ফোনালাপের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন। দুই নেতা জানান, জামায়াত সংঘর্ষে জড়াবে না ও বিশ্ববিদ্যালয়েও প্রবেশ করবে না। তবে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকা ছেড়ে যাবে না।
নির্বাচনের দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষেধ ছিল। তাই বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথগুলোতে অংশ নেন। ভোট চলাকালে প্রেস ক্লাব এলাকায় অংশ নেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। শাহবাগ ও নিউমার্কেট এলাকায় অবস্থান নেন জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। শাহবাগের একপাশে বিএনপির নেতা-কর্মীরাও ছিলেন। সন্ধ্যার পর মহানগর ছাত্রদল বাংলামোটর এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে যায়। বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা নয়াপল্টনে অংশ নেন। জামায়াতও শাহবাগে অবস্থান ধরে রাখে। এতে সংঘর্ষের আশঙ্কা তৈরি হয়।
এর আগে দুপুরের পর থেকেই ঢাবির গণতন্ত্র ও মুক্তি তোরণ ও বকশীবাজার মোড়ে অনেক মানুষ উপস্থিত হন। তুলনামূলকভাবে পলাশীর মোড়ে ভিড় কম হলেও সেখানেও নীরবে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের গতিবিধি নজর কাড়ে। উপস্থিত অনেকে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি; প্রশ্ন করলে অনেকে পাশ কাটিয়ে যান, আবার কেউ হাসি দিয়ে এড়িয়ে
যান। অপরদিকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। রাতে নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জোরদার করা হয়।