সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক গ্রেপ্তার হওয়ায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিলম্বে হলেও খায়রুল হকের বিরুদ্ধে সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। আমরা আশা করি, তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ যথাযথভাবে তদন্ত হবে এবং সঠিকভাবে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। দেশের একজন বড় শত্রু অবশেষে গ্রেপ্তার হলো- এটা জাতির জন্য স্বস্তির বিষয়। গতকাল দুপুরে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে বিএনপি মহাসচিব এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরীসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই, কারণ বাংলাদেশের একজন বড় শত্রু- যিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে দেশের বিপুল ক্ষতি করেছেন। অবশেষে তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন। তিনি এমন একটি পদে ছিলেন, যেখান থেকে দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের দায়িত্ব ছিল তার কাঁধে। কিন্তু সে জায়গায় তিনি জনগণ ও রাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা নিয়ে যে সংক্ষিপ্ত রায় দিয়েছিলেন এবং পরে যে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়, তার মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাত ছিল। সেই রায় দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে গেছে। তার এ বেআইনি ও রাষ্ট্রবিরোধী ভূমিকার জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ‘রাজনৈতিক সংকট তৈরিতে নিঃসন্দেহে খায়রুল হক দায়ী ছিলেন, তার কী ধরনের শাস্তি হওয়া উচিত’- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই সংকটের জন্য তিনি শতভাগ দায়ী। তবে শাস্তির বিষয়ে আমি ব্যক্তিগতভাবে কিছু বলতে চাই না। আইন অনুযায়ী যেসব বিধান আছে, তা অনুসরণ করেই তাকে প্রসিকিউট করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তবে আমি মনে করি, তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ ওই গুরুত্বপূর্ণ পদে বসে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কাজ করার সাহস না পায়। শুধু তিনি নন, যারা এ ধরনের অপকর্মে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধেও সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করি।
মির্জা ফখরুল বলেন, সাবেক বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের রায়ের পরই দেশের সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল হয়। এর পর থেকেই দেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংকটের সূচনা ঘটে, যা জাতিকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। বিচার বিভাগ এমন একটি সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান, যেখানে মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস থাকে। কিন্তু তিনি সে আস্থার জায়গাটি ধ্বংস করেছেন- শুধু তার রাজনৈতিক চিন্তাভাবনার কারণে।
নিহত ৫ শিশুর কবর জিয়ারত করলেন বিএনপি মহাসচিব : রাজধানীর উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচ শিশুর কবর জিয়ারত করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরে দিয়াবাড়ী তারারটেক মসজিদসংলগ্ন কবরস্থানে নিহত শিশুদের কবর জিয়ারতের পর তাদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। ওই কবরস্থানে একই পরিবারের তিন শিশু আরিয়ান, হুমায়ূরা ও বাপ্পী শায়িত আছে। এ ছাড়া দুই শিক্ষার্থী জুনায়েদ ও শাহরিয়ারকেও কবর দেওয়া হয়। বিএনপি মহাসচিব নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের সান্ত্বনা দেন। এ সময় শোকাহত পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নেন।