ছোটপর্দার অন্যতম জনপ্রিয় মুখ মুশফিক আর ফারহান। সাবলীল অভিনয়, সংবেদনশীল চোখের অভিব্যক্তি আর গল্পনির্ভর কাজের প্রতি গভীর ভালোবাসার কারণে এখনকার নাট্যজগতের অন্যতম আলোচিত অভিনেতা তিনি। সম্প্রতি তাঁর জন্মদিনে তাঁকে অন্যভাবে দেখা গেল সজল আহমেদের ‘মেজাজ’-এর ট্রেলারে। সব মিলিয়ে তাঁর সঙ্গে সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন - পান্থ আফজাল
সম্প্রতি আপনার অন্য মেজাজ দেখলাম ‘মেজাজ’-এ...
এ প্রোডাকশনটা খুব শর্ট টাইমে করা। এর লাস্ট শুট হয় ২৬ তারিখে। এরপর ডিসিশন নেওয়া হয়, আমার জন্মদিনের ওইদিন একটা লুক প্রকাশ করা হবে বিগসিটি এন্টারটেইনমেন্টে। প্রকাশ করার পর সবাই ভালোই বলছে। আলহামদুলিল্লাহ! এর ডিরেকশন দিয়েছেন সজল আহমেদ। পুরো একটা টিমওয়ার্ক ছিল। সেজন্য কনটেন্টটি এত ভালো হয়েছে। সবাইকে ধন্যবাদ, দেখেছে সবাই। ভালো ফিডব্যাকও পেয়েছি।
আপনার মিডিয়া জার্নিটা নিয়ে কিছু বলবেন কি?
অবশ্যই। আমার জার্নিটা আসলে খুব কষ্টেরই ছিল। তবে সবকিছুর জন্য আমি বলতে চাই আলহামদুলিল্লাহ। আমি মনে করি, যে কোনো একজন আর্টিস্ট বা যে কোনো প্রফেশনে আপনি যত বেশি কষ্ট করবেন, আল্লাহতায়ালা আপনাকে তত বেশি দেবেন। তখন শেখার সুযোগটাও বেশি হয়। আপনি যদি সহজে সবকিছু পেয়ে যান, তাহলে কিন্তু চেয়ারটার মূল্য বুঝতে পারবেন না। সো, যত বেশি লাইফে বা ক্যারিয়ারের রাস্তাটা কঠিন হবে তখন মনে করবেন আল্লাহর রহমত বেশি।
কোন স্পেসেফিক চরিত্র রয়েছে, যেটি প্রোর্টেট করতে বেশি আনন্দ পান?
আমি আসলে সব ক্যারেক্টারই খুবই ইনজয় করি। স্পেসিফিক কোনো চরিত্রে আটকে থাকলে অন্য কোনো চরিত্র প্রোর্টেট করা সহজ হয় না। কারণ যে কোনো একটি চরিত্র বেশি ভালো লাগলে, বাকি চরিত্রগুলো করতে একটু ঝামেলা হয় আমার। তাই ওটা না করার চেষ্টা করি।
বড় তারকা শিল্পীদের উচ্চ পারিশ্রমিকে কিছুটা প্রভাব পড়ছে ইন্ডাস্ট্রিতে। বাকি সব চরিত্র কাটছাঁট, গল্প সংকুচিত হচ্ছে...
যদি এটা হয় তবে সত্যিই দুঃখজনক। আমি বলব, ‘মেজাজ’ দেখলে কিন্তু আপনার অনুমানটা অন্যরকম হয়ে যাবে। এখানে কিন্তু অনেক আর্টিস্ট। তবে হ্যাঁ, বর্তমান সিচুয়েশন সব মিলিয়ে আমরা কিন্তু অস্থির সময় পার করছি। আমি বাকিটা বলতে পারব না; তবে বিনোদন জগতের সবাই কিন্তু নিজেদের জায়গা থেকে হার্ডওয়ার্ক করছেন জায়গাটা আরও সুন্দর করার জন্য। তো, সেসব দিক থেকে আমি কিন্তু এসব সমস্যার ফেস করিনি। তবে যদি এমন কিছু হয়ে থাকে, সেটা কিন্তু মাত্র দু-একটা উদাহরণ। এটা পুরো প্ল্যাটফর্মকে রিপ্রেজেন্ট করতে পারে না। আপনি একটু খোঁজ নিয়ে দেখেন, যেসব আর্টিস্টের কথা বলছেন, সবার রেমুনারেশন কিন্তু ভালো। আর বাবা-মা ছাড়া কি কোনো গল্প হয়? তাদের ছাড়া কনটেন্ট কীভাবে প্রেজেন্ট করবেন? এখন কনটেন্টের ব্যাপ্তি কিন্তু বেড়ে যাচ্ছে। ৭০ মিনিটের এক একটি কনটেন্ট। আমি মনে করি, আপনার জায়গা থেকে ভাইয়ের চরিত্র হোক, বোন বা যে কোনো ধরনের চরিত্র হোক না কেন কমফোর্ট হতে হবে। আপনি যদি সেটে এসে প্যারা দেন, যে কোনো চরিত্র প্লে করতে ডিরেক্টর যদি আপনাকে কমফোর্ট ফিল না করেন, তাহলে পরিচালক কি সেকেন্ড টাইম আপনাকে দিয়ে কাজ করবেন? সব মিলিয়ে যদি কাজটি না করা হয় তাকে দিয়ে, আপনি যদি বলেন আপনাকে কেন নেওয়া হচ্ছে না, এই ব্লেমটি কি মনে হয় সঠিক? এখন কিন্তু আমাদের জায়গাটা বড় হচ্ছে। সামনে আরও বড় হবে।
এই যে অনেক প্রবীণ ও জুনিয়র শিল্পীরা কাজহীন, বেকার। হতাশায় এই প্রফেশন ছেড়ে দিচ্ছেন, সেটা সম্পর্কে কি অবগত?
হুমম। একজন শিল্পীর হতাশা খুবই বাজে জিনিস। আমি চাই না, এমন দুঃসময় কেউ ফেস করুক। আমি এগিয়ে আসতে চাই সর্বদা। এই ইন্ডাস্ট্রির সবাই এগিয়ে আসবে এসব শিল্পীর পাশে।
একজন শিল্পী হিসেবে নিজের কোন কোন বিষয় কখনো প্রকাশ করতে চাইবেন না?
দোয়া করবেন, যেন অহংকার, দেমাগ এই বিষয়গুলো যেন কখনো আমার মধ্যে না আসে। এটা একটা আর্টিস্টকে ভেঙে দেয়। আসলে অহংকার, দেমাগ, হিংসা যে কখন মানুষের মধ্যে আসবে বা ভর করবে, সেটা কিন্তু মানুষ বুঝতে পারে। এটা সংবরণ করা উচিত সবারই।