বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন বলেছেন, রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ (পারস্পরিক শুল্ক) নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তৃতীয় পর্যায়ের আলোচনার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তৃতীয় পর্যায়ের নেগোসিয়েশনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সময় চাওয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি যুক্তরাষ্ট্র যৌক্তিক পর্যায়ে শুল্ক নির্ধারণ করবে। আশা করি বাংলাদেশ তার সক্ষমতা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারবে।
বাংলাদেশ–যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আলোচনা শেষে দেশে ফিরে সোমবার এ সংবাদ সম্মেলনে আয়োজন করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন।
শুল্ক আলোচনার দ্বিতীয় দফার শেষ দিন ছিল গত ১১ জুলাই। যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে এই আলোচনা হয়।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের এ বিষয়ে নন ডিসকলোজার অ্যাগ্রিমেন্ট রয়েছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্র কী চেয়েছে বা কী আলোচনা হয়েছে তার বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়।
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, রেসিপি বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের অভিঘাত। সেজন্য সরকার সর্বাত্বক পর্যায়ে জড়িত থেকে কাজ করছে। ইতোমধ্যে কিছু কাজ করা হয়েছে, আরও কিছু কাজ করতে হবে। এখন আমরা স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করলাম। তাদের মতামত নিলাম। আমাদের প্রস্তুতি আছে। সামনে যেকোনো বিষয়ে আসলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সেটি নিয়ে আমরা আলোচনা করব।
গত ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপরে রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ (পারস্পরিক শুল্ক) আরোপ করে। যুক্তরাষ্ট্র এ শুল্ক আরোপ করার পরে বিশ্ব বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়লে ৭ এপ্রিল এই শুল্ক ৯ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করা হয়।
গত ৮ জুলাই প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঠানো এক চিঠিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের পণ্য আমদানিতে ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা জানিয়েছেন। নতুন এ শুল্ক হার আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়ার কথা।
এর মধ্যে বিভিন্ন দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করেছে। বাংলাদেশও দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করার চেষ্টা করছে। সেজন্যই বাণিজ্য উপদেষ্টার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি সংস্থা ইউএসটিআরের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছে। যদিও ওই সব বৈঠকে সকল বিষয়ে বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্র সম্মত হতে পারেনি।
সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ের আগে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন দেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদদের নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে তৈরি পোশাক রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু, বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজদের সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ, এপেক্স ফুটওয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান, পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ, র্যাপিডের চেয়ারম্যান ড. আব্দুর রাজ্জাক, ট্যারিফ কমিশনের সাবেক সদস্য মোস্তফা আবিদ খান ও এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক হাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সচিব মাহবুবুর রহমান ও অতিরিক্ত সচিব নাজনীন কাউসার চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বিকেএমইএর সভাপতি মো. হাতেম বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ট্যারিফ আলোচনা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে যে আলোচনা হয়েছে, সেটি নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের যা অবহিত করা হয়েছে... তাতে আমরা সন্তুষ্ট।
বিডি প্রতিদিন/কেএ