পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পাদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ঢাকার জলাশয় বাঁচলেই ঢাকা বাঁচবে। তাই জলাধার পুনরুদ্ধারের বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, ঢাকার খালগুলো উদ্ধারে যে কাজ শুরু হয়েছে তার সুফল পাচ্ছে ঢাকাবাসী। বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবারে ভরা বর্ষা মৌসুমেও ঢাকার জলাবদ্ধতা কম ছিল। আমরা ঢাকার জেলা প্রশাসককে জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ড থেকে ঢাকার ৪০টি পুকুর পুনরুদ্ধারের জন্য অর্থ বরাদ্দ দিয়েছি।
আজ শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম- বাংলাদেশ (ইউডিজেএফবি) আয়োজিত ‘ঢাকার জলাধার পুনরুদ্ধার : চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক নগর সংলাপ এবং বেস্ট আরবান রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড- ২০২৫ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এবারের বেস্ট আরবান রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ডে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ছয়জন সাংবাদিককে পুরস্কৃত করা হয়।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, যখন জনগণের সচেতন থাকে, একতাবদ্ধ থাকে তখন জলাধার রক্ষা কঠিন কিছু নয়। আমরা দেখেছি ভোলাগঞ্জের পাথর চুরির বিরুদ্ধে জনগণের একতাবদ্ধের কারণেই আমরা তা ঠেকাতে পেরেছিলাম। মূল্যবোধের জায়গায় আমরা কাজ করছি কিন্তু লিগ্যাসিতে আমরা পিছিয়ে আছি।
তিনি বলেন, আমি আমার সময়ে এখন পর্যন্ত কোনো বনভূমি কাটবার অনুমতি দেইনি। অনেক জায়গায় আগের সরকার বন কাটার অনুমতি দিয়ে গেছে।
উপদেষ্টা ঢাকার ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) এর বিষয়ে বলেন, ড্যাপে সাধারণ জলাশয় বলে কিছু থাকবে না। জলাশয় মানেই জলাশয়। আমরা ড্যাপ সংশোধন করে জলাশয়ে কোনো প্রকারভেদ রাখিনি এবং কোনোভাবেই জলাশয় ভরাট করা যাবে না। আমরা হাওর সুরক্ষা আদেশ চূড়ান্ত করলাম। হাওরের মধ্যে হাউজবোট কীভাবে চলবে, কৃষি কাজ কীভাবে হবে সে বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক পরিকল্পনাবিদ ড. মু. মুসলেহ উদ্দীন হাসান।
এ ছাড়া বক্তব্য দেন বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যায়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার, স্থপতি সুজাউল ইসলাম খান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. নুরুল্লাহ, ইউএনডিপি'র প্রোজেক্ট ম্যানেজার ইয়ুগেশ প্রাধানাং, নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের সাবেক সভাপতি অমিতোষ পাল, সংগঠনের উপদেষ্টা মোহাম্মদ হেলিমুল আলম প্রমুখ।
নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম-বাংলাদেশ এর সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল খানের সঞ্চালনায় এবং সভাপতি মতিন আব্দুল্লাহ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক দেশ রূপান্তরের সম্পাদক কামাল উদ্দিন সবুজ।
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে বেস্ট আরবান রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড-২০২৫ প্রদান করেন অতিথিরা। এবার নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম-বাংলাদেশের বেস্ট আরবান রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ডে ৫ টি ক্যাটাগরিতে ৬ জন সংবাদকর্মীকে এ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।
প্রিন্ট ও অনলাইন ক্যাটাগরির মধ্যে নগর পরিকল্পনায় দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের স্টাফ রিপোর্টার মো. জাহিদুল ইসলাম; সেবা ও জনদুর্ভোগ বিষয়ে প্রতিদিনের বাংলাদেশের রিপোর্টার রাহাত হোসাইন ও সেবা সংস্থার অনিয়ম-দুর্নীতি বিষয়ে ডেইলি সানের স্টাফ রিপোর্টার রাশিদুল হাসান এ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন।
আর টেলিভিশন ক্যাটাগরিতে যৌথভাবে পুরস্কার পেয়েছেন বাংলাভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার কেফায়েতুল্লাহ চৌধুরী শাকিল ও এখন টিভির স্টাফ রিপোর্টার দেলোয়ার হোসাইন দোলন এবং অনুসন্ধানী ক্যাটাগরিতে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের নাজমুল সাঈদ।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ