চার দফা দাবিতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলন চলাকালে ছয়জনকে বরখাস্তের ঘটনায় একযোগে ৮০৯ কর্মচারী গণছুটিতে চলে যান। এর ফলে নেত্রকোনা জেলায় দেখা দিয়েছে ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয়। বিশেষ করে মৎস্যচাষী ও সাধারণ গ্রাহকরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।
গত বৃহস্পতিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মচারীরা কর্মস্থল ত্যাগ করেন। শনিবার দিনভর জেলার বারহাট্টা, দুর্গাপুর, পূর্বধলা, মোহনগঞ্জ, আটপাড়া,সহ বিভিন্ন উপজেলায় একাধিক গ্রামে বিদ্যুৎ ছিল না। কোথাও কোথাও সাময়িকভাবে সমাধান হলেও অনেক জায়গায় টানা ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন অবস্থা তৈরি হয়।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ সিস্টেম সংস্কার, আরইবির শোষণ-নিপীড়ন ও নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার থেকে মুক্তির দাবিতে সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মানববন্ধন, বিক্ষোভসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন। ধারাবাহিক আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় সম্প্রতি চারজনকে সাময়িক ও দুইজনকে স্থায়ী বরখাস্ত করে কর্তৃপক্ষ। এর প্রতিবাদেই কর্মচারীরা গণছুটি ঘোষণা করেন।
বারহাট্টার বাট্টাপাড়া এলাকার ভুক্তভোগী সোহাগ মিয়া, আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “বিদ্যুৎ না থাকায় দোকানের ফ্রিজে রাখা জিনিস কেউ নিচ্ছে না। শিশু-বৃদ্ধ সবাই কষ্টে আছে। পুকুরে অক্সিজেন না থাকায় মাছ মরে ভেসে উঠছে।”
পল্লী বিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার মো. আকরাম হোসেন বলেন, “আল্লাহর রহমতে বৃষ্টি নেই, তাই বড় ধরনের সমস্যা হয়নি। যেখানে সমস্যা দেখা দিচ্ছে, ঠিকাদারের মাধ্যমে সচল রাখার চেষ্টা চলছে।”
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান জানান, “সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ চলমান রাখতে প্রতিনিয়ত আলোচনা হচ্ছে। গ্রাহকরা যাতে ভোগান্তিতে না পড়েন, সেজন্য বিদ্যুৎ বিভাগের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।”
উল্লেখ্য, নেত্রকোনার ৬ লাখ ৫০ হাজার গ্রাহকের জন্য রয়েছে ২৬টি অভিযোগ কেন্দ্র, ২০টি সাব-স্টেশন এবং ১২টি জোনাল অফিস। তবে গণছুটির কারণে সব কেন্দ্রেই এখন সেবা ব্যাহত হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/আশিক