গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার একটি গ্রামের ১১ ব্যক্তির শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ দেখা দিয়েছে। তাদের মধ্যে ৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে আছেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়ায় এলাকায় অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর অফিস সূত্রে জানা যায়, পাশ্ববর্তী রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় এ বছর গরু-ছাগলের মধ্যে অ্যানথ্রাক্স রোগের প্রকোপ দেখা দেয়। বর্তমানে এ রোগ সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়, বিশেষ করে ঘাঘট ও তিস্তা নদীবেষ্টিত বামনডাঙ্গা, সর্বানন্দ, তারাপুর, বেলকা এবং পৌরসভা এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। সর্বানন্দ, বামনডাঙ্গা, তারাপুর ও পৌরসভায় এরই মধ্যে অ্যানথ্রাক্স টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে।
বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য হাফিজার রহমান জানান, গত ২৯ সেপ্টেম্বর ইউনিয়নের কিশামত সদর গ্রামে মন্টু মেম্বারের বড় ভাই মাহবুর রহমানের একটি রোগাক্রান্ত গরু স্থানীয়রা জবাই করে মাংস কাটাকাটি করেন। অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত ওই ১১ জন মাংস কাটাকাটির কাজে যুক্ত ছিলেন। চার দিন পর গত বৃহস্পতিবার তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশে ফোসকা দেখা দেয় এবং মাংসে পচন ধরতে শুরু করে। বিশেষ করে হাত, নাক, মুখ ও চোখে এসব উপসর্গ দেখা যায়।
আক্রান্তদের মধ্যে মোজা মিয়া, মোজাফফর মিয়া, শফিকুল ইসলাম ও মাহবুর রহমানের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা দিবাকর বসাক বলেন, বেলকা ইউনিয়ন থেকে চার-পাঁচজন অ্যানথ্রাক্স রোগের উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে গাইবান্ধা হাসপাতালে স্থান্তরিত করা হয়েছে।
উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডাক্তার মোজাম্মেল হক বলেন, পৌরসভায় দুটি গরু অ্যানথ্রাক্সে মারা গেছে। সাহাবাজ এলাকায় রোগ দেখা দেওয়ায় সেখানে টিকা দেওয়া হয়েছে। আমাদের কাছে ১৩ হাজার টিকা মজুত আছে এবং আরও টিকার জন্য চাহিদা পাঠানো হয়েছে।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. বিপ্লব কুমার দে বলেন, উপজেলা জুড়ে অ্যানথ্রাক্স টিকা দেওয়া হচ্ছে। অসুস্থ পশু জবাই বা মাংস খাওয়া বন্ধে মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য উঠান বৈঠক ও মাইকিং করা হচ্ছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল