চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে হঠাৎ বেড়েছে জ্বর, সর্দি, কাশি ও গলা ব্যথায় আক্রান্ত রোগী। বিশেষ করে গত দুই সপ্তাহে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে এসব উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ৭৫ শতাংশেরও বেশি। একই পরিবারের একাধিক সদস্য একসঙ্গে আক্রান্ত হচ্ছেন।
চিকিৎসকরা বলছেন, এটি মৌসুমী ভাইরাস। জ্বর হলেও বিশেষ করে ইনফ্লুয়েঞ্জা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া একসঙ্গে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। ফলে রোগীরা বেশি জটিলতায় পড়ছেন।
ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২০০ রোগী আসে। তাদের শতকরা ৭৫% জ্বর, সর্দি ও কাশি রোগে আক্রান্ত।
নাজিরহাট পৌরসভার বাসিন্দা মো. পারভেজ বলেন, আমার পরিবারের চারজন সদস্য গত এক সপ্তাহ ধরে ভাইরাস জ্বরে ভুগছি। জ্বর, শরীর ব্যথা, আর কাশিতে সবাই কষ্ট পাচ্ছি।
চিকিৎসকরা বলছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে এসময় দিনে গরম, রাতে ঠাণ্ডা পড়ার কারণে ভাইরাস সক্রিয় হয়ে ওঠে। জ্বরের সাথে শরীর ব্যথা, মাথা ব্যথা, কাশির মত লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জয়নাল মুহুরী বলেন, ঋতু পরিবর্তনের কারণে ভাইরাসজনিত এই রোগের প্রকোপ বেড়েছে। বিশেষ করে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। আমার ব্যক্তিগত চেম্বারেও প্রতিদিন এমন অনেক রোগী আসছে।
বাংলাদেশ পল্লী চিকিৎসক কল্যাণ সমিতির ফটিকছড়ি শাখার সভাপতি বাবু স্বপ্ন কুমার দত্ত জানান, সারা ফটিকছড়ি উপজেলা জুড়ে আমাদের তিন শতাধিক নিবন্ধিত পল্লী চিকিৎসক রয়েছেন। তারা প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক রোগীর সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তার দাবি, হাসপাতালের বাইরে পল্লী চিকিৎসকরা প্রতিদিন অন্তত তিন হাজার ভাইরাসজনিত জ্বর সর্দি কাশি রোগীকে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন।
ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সৌনম বড়ুয়া বলেন, এটি একটি সাধারণ ফ্লু বা ভাইরাস জ্বর। আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় এটি প্রায়ই হয়ে থাকে। সাধারণত ৫-৭ দিনের মধ্যে এটি সেরে যায়। তিনি বলেন, আমরা রোগীদের বিশ্রাম, প্রচুর পরিমাণে পানি পান এবং প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। গুরুতর মনে হলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যেতে অনুরোধ করে থাকি।
বিডি প্রতিদিন/এমআই