লক্ষ্মীপুরে পরিবেশ আইন অমান্য করে যত্রতত্রে গড়ে উঠছে একের পর এক ইটভাটা। অভিযানে বন্ধের পর ফের ভাটাগুলো চালু করা হলেও প্রশাসনের নীরবতায় প্রশ্ন উঠেছে জনমনে। জেলার রামগঞ্জের ভোলাকোট ইউনিয়নে ১০টি ইটভাটা এখন সচল। সম্প্রতি এলাকায় দুটি ভাটা বন্ধ করা হলেও তা এখন সচল রয়েছে। একই অবস্থা জেলার অন্যান্য এলাকায়। এতে করে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী।
জেলার রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নে মোট জনসংখ্যা ৪০ হাজার ৭০৫ জন। এখানে ইটভাটার সংখ্যা ১০টি। রাস্তার পাশে জনবসতিপূর্ণ এলাকায় কিছুক্ষণ পরপর দেখা মেলে একের পর এক ইটভাটার। এসব ভাটায় দিন-রাত পোড়ানো হচ্ছে ইট, কয়লার পরিবর্তে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ, ব্যবহার হচ্ছে ফসলি জমির মাটি। ফলে ধুলা আর ধোঁয়া ধূসর হয়ে পড়ছে পুরো এলাকা। এর মধ্যে গ্রামবাসীর মধ্যে বাড়ছে রোগবালাই। পরিবেশ ও প্রকৃতি পড়ছে হুমকির মুখে।
পরিবেশ আইন অনুযায়ী জনবসতিপূর্ণ এলাকায় ইটভাটা স্থাপনে বিধিনিষেধ থাকলেও এ এলাকায় তা মানা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, এসব যেন দেখার কেউ নেই। শুধু ভোলাকোট ইউনিয়নেই ১০টি ইটভাটা গড়ে উঠেছে। প্রতিবাদ করলেও তা কাজে আসছে না।
কয়েকজন বাসিন্দা জানান, সম্প্রতি দেহলা এলাকার মক্কা ও আল মদীনা নামীয় দুটি অবৈধ ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেয় প্রশাসন। কিন্তু ইটভাটাগুলো এখন ফের সচল হয়ে গেছে। পুরো জেলাব্যাপী এমনি চিত্র চলছে বলে জানা যায়। এমনকাণ্ডে প্রশাসনের অভিযান নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মনে প্রশ্ন উঠেছে এখন।
সম্প্রতি অভিযানে বন্ধ করে দেয়ার পর ফের চালু করা স্থানীয় দেহলা এলাকার মক্কা ব্রিকস নামীয় ইটভাটার ম্যানেজার জানালেন, অগ্রিম টাকা দিয়ে শ্রমিক আনতে হয়। অনেক টাকা বিনিয়োগ করে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন থেকে বাঁচতে ফের চালু করা হয়েছে ইটভাটা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক রাজিব কুমার সরকার বলেন, অবৈধ ইটভাটা বন্ধে প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত আছে। প্রতিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের এ ব্যাপারে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এদিকে পরিবেশ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, জেলার পাঁচটি উপজেলায় ১৪০টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে ৭৮টিই অবৈধভাবে গড়ে উড়েছে। সম্প্রতি অর্ধ শতাধিক ভাটায় অভিযান চালিয়ে জরিমানার পাশাপাশি চিমনি গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু এসব ভাটাগুলো আবার চালু করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/কেএ