নেত্রকোনায় অটোরিকশা চুরি সন্দেহে পরিকল্পিতভাবে আব্দুস সোবাহান হত্যা মামলার রায়ে তিন আসামীর মধ্যে একজনের ফাঁসির আদেশ, একজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দিয়েছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালত। একটি হত্যা মামলায় বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় দেন সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. হাফিজুর রহমান।
এছাড়াও অপর একজন আসামীর বয়স কম থাকায় তার বিচারকার্য পরিালনা হচ্ছে শিশু আদালতে। ঘটনাটি নেত্রকোনা জেলা সদরের চল্লিশা ইউনিয়নের উত্তর বিলচুলুঙ্গি (চন্দাপতিখিলা) গ্রামের।
দন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- একই এলাকার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত এমদাদ হোসেন ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আবুল হাসেম ওরফে মো. আবুনি।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আবুল হাসেম ওরফে মো. আবুনির একটি অটোরিকশা হারানো যায়। পরে সন্দেহের জেরে পুর্ব পরিকল্পিতভাবে সোবাহানকে গত ২০১৯ সনের ৬ জুলাই পরপর দুবার মোবাইল ফোনে কল দিয়ে ডেকে নেয় সোবাহানেরই চাচাতো ভাই রাসেল। পরে রাসেল, আবুনি ও এমদাদ মিলে সোবাহানকে শ^াসরোধ করে হত্যার পর গুম করার লক্ষ্যে একই এলাকার চাঁন মিয়ার পতিত জমিতে পুঁতে রাখে। এদিকে মোবাইলের কলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর না ফিরলে পরদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠে সোবাহানের স্ত্রী শিউলি আক্তার তার সতীনসহ আশপাশের মানুষকে জানিয়ে খুঁজতে বের হন।
খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে একই এলাকার চাঁন মিয়ার পতিত জমির এখানে স্বামীর গামছা পান স্ত্রী শিউলি আক্তার। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় মাটি খুড়ে লাশ উদ্ধার করে। পুলিশ গিয়ে লাশের সুরুতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় স্ত্রী শিউলি আক্তার বাদী হয়ে ওই দিনই নেত্রকোনা মডেল থানায় ডেকে নেয়া রাসেল সহ এমদাদ ও অটোরিকশার মালিক আবুল হোসেনের নামে মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে তদন্ত শেষে চার্জশিট দাখিল করলে ১৪ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত এ রায় দেন। এদিকে এই মামলার অপর আসামী রাসেলের বয়স কম থাকায় তাকে শিশু কিশোর দন্ডবিধিতে নেয়া হয়।
এদিকে বুধবার দুপুর থেকে শুরু হওয়া বিচার কার্য শেষে মামলার রায় শুনে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত মূল পরিকল্পনাকারী আসামি আবুল হাসেমের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি এমদাদ। আদালত চত্বরেই এমন ঘটনা দেখে সকলেই হতবিহ্বল।
বিডি প্রতিদিন/এএম