মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার দীঘি ইউনিয়নের ভাটবাউর গ্রামের মৃত হযরত আলীর আট সন্তানের মধ্যে চারজনই প্রতিবন্ধী। জন্মের সাত বছর বয়স থেকে একে একে দুই ভাই ও দুই বোন প্রতিবন্ধী হয়ে যায়। এক ভাই শারীরিক, শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধী। অন্যরা সকলেই শারীরিক প্রতিবন্ধী।
জানা যায়, শারীরিক প্রতিবন্ধী বড় ভাই ইজ্জত আলী অভাব অনটনের মধ্যে লোকজনের সহযোগিতায় ১৯৯৫ সালে এসএসসি পাশ করেন। অভাবের কারণে আর এগোতে পারেনি। ইজ্জত আলী বোবা ছোট ভাইকে নিয়ে ভাটবাউর বাজারের ফুটপাতে পানের দোকান করে জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন।
নিজের সংসার না চললেও প্রতিবন্ধী ভাইবোনদের নিয়ে চরম কষ্টে জীবন চালাচ্ছেন। তারা শুধু বেঁচে থাকার আকুতি জানান। প্রতিবন্ধী বোনরা ভাইয়ের অভাবের সংসারে বোঝা হতে চান না। বাড়িতে প্রবেশের রাস্তা না থাকায় তারা বাড়ি থেকে সহজে বের হতে পারে না। চেয়ারম্যান-মেম্বার কোন খোঁজ নেন না বলেও দুঃখ করেন। শুধু ভোটের সময় বিভিন্ন প্রলোভন দেখান তারা।
এলাকার ইয়াছমিন বেগম নামে এক নারী বলেন, এতো কষ্টের জীবন আমার জীবনে আর দেখিনি। এক বাড়ির চারজন প্রতিবন্ধী। সরকারের কী কিছু করার নেই? চেয়ারম্যান-মেম্বার তো ভোটের পর আর খবর রাখেন না।
ইজ্জত আলীর পরিবারের একটাই চাওয়া-ইজ্জত আলীর দুটি সুস্থ্য ছেলে সন্তান রয়েছে। তাদের কোন ব্যবস্থা হলে বেঁচে যাবে পরিবারটি। ইজ্জত আলী বলেন, মাত্র দুই হাজার টাকা পুঁজির ব্যবসা। চালান থাকলে বোবা ভাইকে নিয়ে ব্যবসা করে প্রতিবন্ধী বোন দুটিকে নিয়ে বেঁচে থাকা যেত। আত্মপ্রত্যয়ী ইজ্জত আলী বলেন, আমরা না খেয়ে থাকি তবু ভিক্ষা করি না। সরকার ও বিত্তশালীদের কাছে দাবি, আমাদের যেন ভিক্ষা করতে না হয় সেই ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য।
স্থানীয়রা বলেন, ইজ্জত আলীরা গরীব-প্রতিবন্ধী হলেও আত্মসম্মান নিয়ে বেঁচে থাকতে চায়।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ