এবার আরও আড়াইশ নারীর চোখে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন। সুদমুক্ত ঋণ পেয়ে নতুন এই স্বপ্ন দেখছেন তারা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা অডিটোরিয়ামে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে আবারও দরিদ্র ও অসহায় নারীদের মাঝে সুদ ও সার্ভিস চার্জমুক্ত ঋণ বিতরণ করেছে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন। গত ২০ বছর ধরে একটানা এ ঋণ বিতরণ করে বসুন্ধরা ফাইন্ডেশন দেশে বিদেশে অনুকরণীয় এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছে।
সোমবার সকালে এই ৭৬তম ঋণ বিতরণ অনুষ্ঠানে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ২৪৯ জন হতদরিদ্র নারীর হাতে মোট ৪১ লাখ ৫০ হাজার টাকা তুলে দেয়া হয়। সকালে ওইসব হতদরিদ্র নারীদের হাতে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা ঋণ আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দেন বসুন্ধরা গ্রুপের উপদেষ্টা ট্রেজারার ময়নাল হোসেন চৌধুরী।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম নাসিমুল হাই এফসিএস, ডিজিএম মাইমুন কবির, ব্যবস্থাপক মোশারফ হোসেন, বসুন্ধরা কালের কণ্ঠ শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান, বাঞ্ছারামপুর সরকারি কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. চাঁন মিয়া সরকার, বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সিনিয়র অফিসার আমির হোসেন আনোয়ার, জুনিয়র অফিসার মো. শাহজাহান, মোহাম্মদ বাছির প্রমুখ।
জানা যায়, এ নিয়ে মোট ৭৬ বার বাঞ্ছারামপুর, নবীনগর ও হোমনা এই তিন উপজেলার মোট ১৯১ টি গ্রামের ২৮ হাজর ৩৭৮ জন হতদরিদ্র নারীর হাতে সর্বমোট ২৭ কোটি ৫১ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা ঋণ দেয়া হল।
প্রধান অতিথি ময়নাল হোসেন চৌধুরী বলেন, বাঞ্ছারামপুর, নবীনগর ও হোমনা উপজেলার ওইসব দরিদ্র নারীদের অনেকেই বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন থেকে তৃতীয়বারের মতো সুদবিহীন এই ঋণ নিয়ে ইতিমধ্যে সাবলম্বী হয়েছেন। ২০০৫ সালে শুরু করে এই ঋণ কার্যক্রম গত ২০ বছর ধরে দেশের সর্ববৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান মহোদয়ের সরাসরি দিকনির্দেশনায় নিয়মিতভাবে সুশৃংখলভাবে চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, সারাদেশের কোথাও সুদ ও সার্ভিস চার্জমুক্ত ঋণ আছে বলে আমার জানা নেই। চেয়ারম্যান মহোদয় শিকড়ের টানে অসহায় ও হতদরিদ্র লোকগুলোকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে আজ থেকে ২০ বছর পূর্বে সুদ ও সার্ভিস চার্জমুক্ত ঋণ বিতরণ কার্যক্রম চালু করেছিলেন, যা আজ এক ইতিহাস।
ঋণ গ্রহণ শেষে ঋণগ্রহীতা জাহিদা আক্তার, পারুল বেগম, শিল্পী আক্তার, রাশেদা বেগম জানান, বিনা সুদের এ ঋণ দিয়ে তারা হাঁস-মুরগী, গরু-ছাগল, মুদি দোকান, শাক-সবজি চাষসহ ৩২ ধরণের কাজে বিনিয়োগ করে সাবলম্বী হচ্ছেন। সেজন্য তারা বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যানের জন্য প্রাণভরে দোয়া করেন।
চরমরিচাকান্দির বিউটি আক্তার (২৫) বলেন, ‘এই ঋনের টাকা নিয়া কৃষিকাজ করব। জমিতে অনেক ফসল হলে সংসারে খাওনের অভাব থাকবে না। আমি আল্লাহর কাছে বসুন্ধরা মালিকের লাগি দোয়া করি। ’
দশদোনা গ্রামের মাকসুদা আক্তার (৩০) বলেন, ‘এই টেহা দিয়া গরু বাছুর কিনমু। আল্লাহ বাছুর ডা বড় করলে লাভ হবে। বসুন্ধরাকেও যেন আল্লাহ বেশি করে টেহা দেয় দোয়া করি। ’
সকালে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আযোজিত এই ৭৬তম ঋণ বিতরণ অনুষ্ঠানে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা ছাড়াও স্থানীয় সাংবাদিক ও নানা শ্রেণির ব্যক্তিবর্গও উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল