ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ রেজাউল করীম বলেছেন, মানুষ আজ আল্লাহকে ভুলে নাফরমানি করছে অহরহ। অথচ একজন মানুষ কবরে গিয়ে মাফ না পাওয়া পর্যন্ত নিজেকে নিকৃষ্ট পশুর মতো মনে করতে হবে। তাক্বওয়া বা আল্লাহর ভয় অর্জনের মাধ্যমে মহান রবের সন্তুষ্টি নিয়ে কবরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে।
বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই এলাকায় তিন দিনব্যাপী মাহফিলের আখেরি মোনাজাতের পূর্বের বয়ানে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় চরমোনাই পীর বলেন, আল্লাহর ভয় যার অন্তরে নেই, ওই মানুষ এমনকি আলেম, মুফতি ও পীরের কোনো মূল্য নেই। নিজেকে নিজে ছোট মনে করতে হবে। আমিত্বভাব ও তাকাব্বুরী পরিত্যাগ করতে হবে। হিংসা-বিদ্বেষ পরিত্যাগ করতে হবে। ঘোড়ার মুখে যেভাবে লাগাম থাকে, সেভাবে রাগের মুখে লাগাম লাগাতে হবে। সকাল-সন্ধ্যা জিকিরের মাধ্যমে ক্বলব পরিশুদ্ধ করতে হবে। গীবতের মতো গুনাহ থেকে বাঁচিয়া থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, পরিবারের সবাইকে দ্বীন শিক্ষা দিয়ে দ্বীনের পাবন্দি করতে হবে। পরিবারে পর্দা জারি করতে হবে। সকল প্রকার নেশাজাত দ্রব্য থেকে বাঁচিয়া থাকতে হবে। আল্লাহওয়ালাদের কিতাব পড়তে হবে। সাপ্তাহিক হালকায়ে জিকির ও তালীমে নিয়মিত অংশ নিতে হবে। ছহীহ শুদ্ধভাবে কুরআন তিলাওয়াত করতে হবে।
আখেরি বয়ানের পর চরমোনাই পীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বিভিন্ন লিখিত প্রশ্নের উত্তর দেন। এ সময় তিনি মুরিদানদের সঠিক পথে পরিচালিত হওয়ার বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করেন। পরে আখেরি মোনাজাতে ফিলিস্তিন, ভারত, কাশ্মীর, মিয়ানমার, সিরিয়াসহ বিশ্বের নির্যাতিত মুসলমানদের নিরাপত্তা ও সমগ্র মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা করেন।
এবারের মাহফিলে আসা মুসল্লিদের মধ্যে ১০ জন বার্ধক্যজনিত ও হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তারা হলেন-মুন্সিগঞ্জের মো. আলাল খালাশি (৭২), পাবনার আব্দুল জলিল খান (৬৫), গাজীপুরের মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বেপারী (৫০), চুয়াডাঙ্গার মো. ওসমান (৫০), নীলফামারির মো. মঞ্জুরুল ইসলাম (৬০), চাঁদপুরের আলি আহম্মদ (৫৫), বগুড়ার মো. আব্দুল হামিদ (৬৫), চাদপুরের মো. আইউব আলী (৬০), নারায়ণগঞ্জের মো. আলতাফ হোসেন (৬৫), নরসিংদীর মো. আবুল কালাম (৪২)। সকলের জানাজা শেষে মাহফিল হাসপাতালের নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্সে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/এমআই