ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা সাবান ফ্যাক্টরি থেকে বাঘৈর চিতাখোলা সড়কটিতে এক যুগেও লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া। ছয় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এ সড়কটির পাঁচ কিমিই কাঁচা। বাকি এক কিলোমিটারে ইটসলিং করা হলেও এখন ইটের কোনো অস্তিত্ব নেই। সামান্য বৃষ্টিতে পুরো সড়কে জমে পানি। কাঁচা অংশ কাদায় একাকার হয়ে যায়। অন্য সময় কোনোভাবে ব্যবহার করা গেলেও বর্ষা মৌসুমে সড়কটি অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায় স্থাানীয়দের কাছে।
সাবান ফ্যাক্টরি-বাঘৈর চিতাখোলা সড়কের পাশেই কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ সার্কেল রাজস্ব (ভূমি) এবং শুভাঢ্যা ইউনিয়ন ভূমি অফিস। দুটি সরকারি কার্যালয়ে সেবা নিতে আসা গ্রাহকের দুর্ভোগ পোহাতে হয় সড়কের কারণে। ছাড়া সড়কের পাশে রয়েছে কয়েকটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান। প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার হাজার হাজার মানুষ। সড়কটিতে চলে মালবাহী বড় বড় ট্রাকও। সরেজমিন দেখা যায়, ট্রাক, রিকশা, মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার, সিএনজিসহ অন্যান্য যানবাহন ও হাজার হাজার মানুষ চলাচল করছে এ সড়ক দিয়ে। জমে থাকা নোংরা পানিতে নষ্ট হচ্ছে পথচারীদের জামাকাপড়। বিকল হয় যানবাহন। চরম ভোগান্তিতে আছেন আশপাশের ব্যবসায়ীরাও। আলিফ আহম্মেদ নামে দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানায়, বিদ্যালয়ে যেতে হলে এ সড়কটিই ব্যবহার করতে হয়। এখানে হেঁটে চলাও কষ্টকর। পানির নিচে থাকা গর্তে রিকশার চাকা পড়ে উল্টে যায়। প্রতিনিয়ত বীজনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। আমরা এর প্রতিকার চাই। শামসুল আলম নামে একজন ব্যবসায়ী বলেন, রিকশা যেতে চায় না এ সড়কে। গেলেও অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হয়। সামান্য বৃষ্টিতে সড়ক ডুবে যায়। মাসের পর মাস ড্রেনের ময়লা পানি জমে থাকে। চলাচলে খুব সমস্যা হয়। ভূমিসেবা নিতে আসা আলী হোসেন বলেন, প্রতিদিন শত শত মানুষ জরুরি প্রয়োজনে আসেন ভূমি অফিস ও অ্যাসিল্যান্ড অফিসে। সড়কে খানাখন্দ ও পানি থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। তিনি বলেন, এ রাস্তা দিয়ে গাড়ি আসতে চায় না, অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে আসতে হয়।
স্থাানীয় এক বাসিন্দা জানান, এই সড়কে দীর্ঘদিনের দুর্ভোগের পেছনে রাজনৈতিক প্রভাব ও ব্যক্তিস্বার্থ জড়িত। সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের মালিকানাধীন আবাসন প্রকল্প ‘প্রিয় প্রাঙ্গণ-১’ এ সড়কের পাশেই। কমমূল্যে জমি নেওয়ার কৌশল হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি ফেলে রাখা হয়েছে যাতে আশপাশের জমির দাম না বাড়ে। তিনি বলেন, ‘যদি সড়কটির উন্নয়ন হতো, এলাকার ভূমির মূল্যও বাড়ত। পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন থামিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা আশাবাদী, বর্তমান সরকার এ সড়কের দিকে নজর দেবে।’ কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আরিফুর রহমান জানান, সড়কটি সংস্কারের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। খুব দ্রুতই কাজ শুরু হবে আশা করছি।