ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় সংযোগ সড়কের অভাবে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় মধুগাড়ি ঘাট সংলগ্ন এলাকায় মাথাভাঙা নদীর ওপর সাড়ে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি সেতু দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে জনগণের কোনো কাজে আসছে না। মেহেরপুর ও কুষ্টিয়া জেলার বেতবাড়িয়া-মধুগাড়ি এলাকার কয়েক লাখ মানুষের কাছে সেতুটি এখন হয়ে উঠেছে দীর্ঘশ্বাসের প্রতীক। যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। শিক্ষার্থী, রোগী ও কৃষিপণ্য পরিবহনে সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়তই সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বামন্দী আরএইচডি থেকে প্রাগপুর জিসি ভায়া বেতবাড়িয়া-মধুগাড়িঘাট সংলগ্ন এলাকায় মাথাভাঙা নদীর ওপর প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭৫ মিটার দীর্ঘ পিএসসি গার্ডার সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কফিল অ্যান্ড কোহিনুর এন্টারপ্রাইজ। ২০২০ সালের জুলাই মাসে কাজটি শুরু হয়ে ২০২১ সালের শেষের দিকে শেষ হওয়ার কথা ছিল। ২০২৩ সেতুর মূল কাজ শেষ হলেও এখনো হয়নি সংযোগ সড়ক। ফলে কষ্টে আছেন স্থানীয়রা। কেউ কেউ সেতুর ওপর ফসল শুকাচ্ছেন।
স্থানীয়রা বলছেন- মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বেতবাড়িয়া ও কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মধুগাড়ি এলাকার মানুষ এ সেতুতে সংযোগ সড়ক না থাকায় ৮-১০ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে মেহেরপুর ও কুষ্টিয়ায় যাতায়াত করে। এ সেতুর সংযোগ সড়ক হলে ব্যবসা-বাণিজ্য বড় অবদান রাখবে।
বেতবাড়িয়া গ্রামের আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, যখন সেতু নির্মাণ হয় তখন রাস্তার যে নকশা ছিল সেখানে পরিবর্তন করে দেন স্থানীয় খোকন এমপি। এখন সোজা রাস্তা দিক পরিবর্তন করে আঁকাবাঁকা করা হয়েছে। গাড়ি ঘুরে ব্রিজে উঠতে গেলে দুর্ঘটনা ঘটবে। এমপি খোকনের ইচ্ছা পূরণের বলি আমরা।
গরু ব্যবসায়ী ফজলু মিয়া বলেন, ৮-১০ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে আমাদের চলাচল করতে হয়। এ সেতু হলে দূরত্ব কমবে, সঙ্গে যাতায়াত খরচ কমবে।
জেবুন নেসা বলেন, এ সেতু চালুর আশায় কেন্দ্র করে আমরা অনেকেই জমি কিনেছি। কিন্তু সেতুর সংযোগ সড়কের কাজ শেষ না হওয়ার কারণে বাড়ি করতে পারছি না।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, জমি অধিগ্রহণের নামে আমাদের হয়রানি করছে। বারবার জেলা ও উপজেলা শহরে আমাদের ঘুরতে হচ্ছে। বিভিন্ন কাগজ নিচ্ছে। বারবার ডাকছে। জেলা ও উপজেলা শহরে আমাদের ঘুরতে হচ্ছে।
গাংনী এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী ফয়সাল হোসেন বলেন, ভূমি-সংক্রান্ত জটিলতা রয়েছে। এখানে জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। মন্ত্রণালয়ের ছাড় করা টাকা নির্ধারিত সময়ে না পাওয়ায় জমি অধিগ্রহণও হয়নি। আপ্রচ সড়কও নির্মাণ হয়নি।