রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) নাট্যকলা বিভাগের নিয়োগ কার্যক্রম চলাকালে সভাপতি মীর মেহবুব আলমের সঙ্গে চাকরিপ্রত্যাশী রাহাত ইসলামের কথোপকথনের একটি রেকর্ড ফাঁস হয়। এতে সভাপতির বিরুদ্ধে চাকরি পেতে অর্থ চাওয়ার অভিযোগ ওঠে। রেকর্ডটি আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স (এআই) দিয়ে তৈরি দাবি করে অভিযোগটি অস্বীকার করা হয়। তবে ফরেনসিক টেস্ট করে রেকর্ডটি আসল বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ফরেনসিক সাইকোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেস (বিআইএফপিএস)। এ ঘটনায় নিয়োগ কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘আমরা পুনরায় বিষয়টি খতিয়ে দেখব এবং সার্বিক তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেব।’
১৫ সেপ্টেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন রাহাত। তবে তিনি মৌখিক পরীক্ষার (ভাইভা) জন্য মনোনীত হননি। ফলে চাকরিতে অর্থনৈতিক লেনদেনের অভিযোগ তোলেন এবং উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। এ ছাড়া অভিযোগের কপি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টার কার্যালয়সহ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে ডাকযোগে পাঠানো হয়। একই সঙ্গে বিভাগের সভাপতি মীর মেহবুব আলমের সঙ্গে তাঁর নিয়োগসংক্রান্ত আড়াই মিনিটের একটি ফোনালাপের রেকর্ড সংযুক্ত করা হয়। রেকর্ডটি সমাজমাধ্যমে প্রকাশ হলে নিয়োগ কার্যক্রম নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। সভাপতি ফোনালাপটি এআই দিয়ে তৈরি দাবি করে অভিযোগ অস্বীকার করেন। এ ঘটনার পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থিয়েটার অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (আরইউটিএএ) সভাপতি হোসাইন মারুফ রেকর্ড ফরেনসিক টেস্টের উদ্যোগ নেন এবং এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিআইএফপিএস রেকর্ডের ফরেনসিক টেস্ট করে। এ ব্যাপারে নাট্যকলা বিভাগের সভাপতি মীর মেহবুব আলমের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
রাহাত ইসলামের অভিযোগ, নিয়োগপ্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখা হয়নি। নিয়োগের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন সরাসরি অর্থের বিনিময়ে পছন্দের প্রার্থী নির্বাচনের চেষ্টা করেছেন। নিয়োগ বোর্ডে প্রথমে যে অধ্যাপককে বিশেষজ্ঞ হিসেবে রাখা হয়েছিল, পরে তাঁকে বাদ দিয়ে অন্যজনকে রাখা হয়। এমনকি লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও নির্দিষ্ট বিষয় আগেই নির্দিষ্ট প্রার্থীদের দিয়ে অনৈতিক সুবিধা দেওয়া হয়েছে। তাই পুনরায় স্বচ্ছ নিয়োগ কার্যক্রমের দাবি জানান তিনি।