রংপুরের পীরগাছায় গত এক মাসে ১২টি বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। চুরি হওয়া ১২টির মধ্যে ৬টি ট্রান্সফরমার ইটভাটায় লাগানো ছিল, বাকি ট্রান্সফরমারগুলো পানি সেচের। চুরি হওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে গ্রাহকদের। এ বিষয়ে ইটভাটার এক মালিক পক্ষ থানায় মামলা করলেও অন্যরা অভিযোগ দিয়েছেন। এভাবেই উত্তরাঞ্চলের ১৭টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গত ৩৫ বছরে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি তার ও ট্রান্সফমার চুরি হয়েছে। এসব চুরির ঘটনায় মামলা দায়ের হলেও আইনের ফাঁকফোকর গলিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে অপরাধীরা। মনিটরিং না থাকায় তিন হাজারের ওপর মামলার গতিহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
জানা গেছে, প্রতিটি সমিতির আওতায় গড়ে ৬ থেকে ৯ হাজার কিলোমিটারের বেশি বৈদ্যুতিক লাইন রয়েছে। সেই হিসাবে উত্তরাঞ্চলে সমিতির আওতায় ১ লাখ কিলোমিটারের বেশি বৈদ্যুতিক লাইন রয়েছে। গত ৩৫ বছরে কার্যকর পদক্ষেপ না থাকার কারণে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির তার ও ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। মাঝে মধ্যে দুই একটি মামলা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় অধিকাংশ মামলা ঝুলে থাকে অথবা আসামিরা জামিন নিয়ে থানা ম্যানেজ করে অব্যাহতি নেয়। গত কয়েক মাসে রংপুরের পাগলাপীর ও শঠিবাড়ি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কমপক্ষে আড়াই শতাধিক ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। সূত্রমতে, এ অঞ্চলে পল্লী বিদ্যুতের যাত্রা শুরু করে ১৯৮৬ সালে। প্রথম অবস্থায় কিছুটা ভালোভাবে চললেও ১৯৯০ সালের পর থেকে শুরু হয় ফ্রি স্টাইলে তার ও ট্রান্সফরমার চুরির হিড়িক।
সূত্রমতে, গত ৩৫ বছরে উত্তরাঞ্চলের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৫২ হাজার কিলোমিটার তার চুরি হয়েছে। চোরাইকৃত এসব তারের আনুমানিক বাজার মূল্য ১ হাজার কোটি টাকার ওপরে। এ ছাড়া ট্রান্সফরমারও চুরি হয়েছে ৪০ হাজারের ওপর। যার মূল্য দেড় হাজার কোটি টাকার ওপর। ট্রান্সফরমার ও তার চুরি হয়েছে আড়াই হাজার কোটি টাকার ওপর। এসব তথ্য পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। শঠিবাড়ি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার আশরাফুল উদ্দিন খান জানান, তার আওতাধীন পাঁচটি জেলায় ৪০ হাজারের বেশি ট্রান্সফরমার রয়েছে। সাম্প্রতিককালে দেড় শতাধিক ট্রান্সফরমার চুরির মামলা হয়েছে। চুরি রোধে পল্লী বিদ্যুৎ কঠোর অবস্থানে রয়েছে।