কিশোরগঞ্জ-১ (সদর-হোসেনপুর) আসনের জন্য ভোটের মাঠ চষছেন চারটি দলের নয়জন নেতা। তারা হলেন- বিএনপির রেজাউল করিম খান চুন্নু, ভিপি ওয়ালীউল্লাহ রাব্বানী, রুহুল হোসাইন, মাজহারুল ইসলাম, ভিপি খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল, ব্যারিস্টার এম আতিকুর রহমান; জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের অধ্যাপক মোসাদ্দেক ভূইয়া; ইসলামী আন্দোলনের আজিজুর রহমান ও গণঅধিকার পরিষদের আবু হানিফ।
কিশোরগঞ্জ-১ আসনটি জেলার রাজনীতি ও ভোটের রাজনীতিতে সবসময়ই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে। কারণ এখান থেকেই নিয়ন্ত্রিত হয় জেলার রাজনীতি। এখানকার পরিস্থিতির প্রভাব পড়ে সারা জেলায়। ফলে প্রার্থী বাছাইয়ে ভুল করলে এর মাশুল দিতে হয় জেলার অন্য আসনগুলোতেও।
এ আসনটি ১৯৯১ সালের পর থেকেই বিএনপির হাতছাড়া। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি থেকে অংশ নিয়েছিলেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি রেজাউল করিম খান চুন্নু। এর পর থেকেই তিনি অনেকটা রাজধানীমুখী। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কিছুদিন তিনি এলাকায় গণসংযোগসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে নিজের প্রার্থিতা জানান দিয়েছেন। তিনি ছাড়া সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তৎপরতা চালাচ্ছেন জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ভিপি ওয়ালীউল্লাহ রাব্বানী। তৃণমূলের অনেক নেতা-কর্মী ও তার অনুসারীদের দাবি, ক্লিন ইমেজের নেতা হিসেবে সুখ্যাতি রয়েছে রাব্বানীর। তৃণমূলে যথেষ্ট প্রভাবের পাশাপাশি দলের বাইরেও রয়েছে তার ভালো অবস্থান। ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহের টানা ৩০ বছর ইমামতি করে সুখ্যাতি অর্জন করেছেন তার পিতা অধ্যক্ষ এ কে এম নূরুল্লাহ। তার অগণিত ছাত্র-ভক্তরা নির্বাচনে ভোটব্যাংক হিসেবে কাজ করবে বলে তার অনুসারীরা আশা করছেন। বিগত ১৪ বছর ধরে দলের কোনো পদে অধিষ্ঠিত না থাকা সত্ত্বেও একক প্রচেষ্টায় কিশোরগঞ্জ শহরে বিশাল শোডাউন করে নিজের প্রার্থিতা জানান দিয়েছেন রাব্বানী। এ ছাড়া বিভিন্ন ইউনিয়ন এবং পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডেও কর্মিসভা করছেন। বিএনপি থেকে আরও প্রচারণায় রয়েছেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি রুহুল হোসাইন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ভিপি খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল ও জেলা বিএনপির সদস্য ব্যারিস্টার এম আতিকুর রহমান।
অপরদিকে বেশ কিছুদিন ধরেই এলাকায় গণসংযোগ করছেন ইসলামী আন্দোলনের ঘোষিত প্রার্থী আজিজুর রহমান। দীর্ঘ প্রবাসজীবন কাটিয়ে সম্প্রতি দেশে ফিরে আসেন তিনি। জামায়াতে ইসলামী থেকে অধ্যাপক মোসাদ্দেক ভূইয়াকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
তিনিও বিভিন্নভাবে গণসংযোগ চালাচ্ছেন। গণঅধিকার পরিষদ থেকে প্রচারণা চালাচ্ছেন দলের উচ্চতর পরিষদের সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ।
এ আসনে কমিউনিস্ট পার্টি ও বাসদ নির্বাচনি মাঠে সরব থাকলেও তারা এখন পর্যন্ত প্রার্থী নির্ধারণ করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে এখানে জাতীয় পার্টির তৎপরতা একেবারেই নেই।