চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) আগামীকাল অনুষ্ঠিত হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় সমাবর্তন। এতে অংশগ্রহণ করে সনদ নেবেন প্রায় ২৩ হাজার সমাবর্তী। শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং অতিথিসহ প্রায় ২৫ হাজার লোকের সমাবেশে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ডিলিট ডিগ্রি দেওয়া হবে। বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্যবিমোচন ও শান্তি প্রতিষ্ঠার অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তাঁকে এ ডিগ্রি দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া তিনি সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখবেন। গতকাল চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সমাবর্তনের সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে বিস্তারিত জানান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সমাবর্তীরা নিজ নিজ বিভাগ ও ইনস্টিটিউট থেকে সকাল ১০টা থেকে ১২টার মধ্যে খাবার ও গিফট আইটেম সংগ্রহ করতে পারবেন। গিফটের মধ্যে থাকবে ব্যাগ, স্মরণিকা, কলম, পিন ও ওয়ালেট। কনভোকেশন টুপি গিফট হিসেবে বিবেচিত হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শহর থেকে ক্যাম্পাসের দূরত্ব ২২ কিলোমিটার হওয়ায় শাটল ট্রেনের পাশাপাশি ১০০ বাস সকাল ৬টা থেকে যাতায়াত শুরু করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ব্যতীত ক্যাম্পাসে আর কোনো যানবাহন প্রবেশ করবে না, তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেট থেকে ক্যাম্পাসে থাকবে শাটল বাসের ব্যবস্থা। পঞ্চম সমাবর্তনে ৪২ জন পিএইচডি এবং ৩৩ জন এম.ফিল ডিগ্রিসহ মোট ২২ হাজার ৫৮৬ জন শিক্ষার্থীকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি দেওয়া হবে। কলা ও মানববিদ্যায় ৪ হাজার ৯৮৮ জন, বিজ্ঞানে ২ হাজার ৭৬৬ জন, ব্যবসায় প্রশাসনে ৪ হাজার ৫৯৩ জন, সমাজবিজ্ঞানে ৪ হাজার ১৫৮ জন, জীববিদ্যায় ১ হাজার ৬৮৫ জন, ইঞ্জিনিয়ারিং ৭৯৬ জন, আইনে ৭০৩ জন, শিক্ষায় ৩১৭ জন, মেরিন সায়েন্সে ২৮৪ জন ও চিকিৎসায় ২ হাজার ২৯৬ জন বিভিন্ন ডিগ্রি অর্জন করেছেন। এ সমাবর্তনের প্রাক্কলিত বাজেট ধরা হয়েছে প্রায় ১৪ কোটি টাকা। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা পাওয়া গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চবির উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন ও অধ্যাপক ড. মো. শামীম উদ্দিন খান, আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জাফর উল্লাহ তালুকদার ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. এনায়েত উল্যা পাটওয়ারী প্রমুখ। বাংলাদেশের অন্যতম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০টি অনুষদের অধীনে বর্তমানে ৪৮টি বিভাগ, ছয়টি ইনস্টিটিউট ও পাঁচটি গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৮ হাজার ৫১৫ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। শিক্ষক সংখ্যা ৯৯৬, কর্মকর্তা ৪৪৫, কর্মচারী (তৃতীয় শ্রেণি) ৫৪৫ জন এবং কর্মচারী চতুর্থ শ্রেণি ৯৮৩ জন। শিক্ষার্থীদের আবাসনের জন্য ১৪টি হল রয়েছে। ছাত্রদের জন্য ৯টি ও ছাত্রীদের জন্য ৫টি এবং একটি হোস্টেল রয়েছে। স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) ডিগ্রি ছাড়াও এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমফিল, পিএইচডি, এমডি, এমএস (মেডিকেল সায়েন্স) উচ্চতর ডিগ্রি দেওয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, চবিতে ৫৯ বছরে সমাবর্তন হয়েছে মাত্র চারবার। সর্বশেষ চতুর্থ সমাবর্তন হয়েছে ২০১৬ সালে। যেখানে ২০১০ সাল পর্যন্ত পাস করা শিক্ষার্থীরা সমাবর্তন পেয়েছে।