মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিনম্র শ্রদ্ধায় বীর শহীদদের স্মরণ করা হয়েছে। বুধবার ((২৬ মার্চ) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শহীদ মিনারে শ্রদ্ধ নিবেদনের মাধ্যমে জাতির বীর সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এদিম্ন সকালে সূর্যোদয়ের পর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে জাতির বীর সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব আশরাফুল আমীন, প্রধান প্রকৌশলী আনিসুর রহমানসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। এরপর মেয়র চসিক কার্যালয়ে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানোর পর দোয়া ও আলোচনা সভায় অংশ নেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মেয়র বলেন, চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানসহ মুক্তিযুদ্ধে দেশের পক্ষে নানাভাবে ভূমিকা সকল বীরকে শ্রদ্ধা জানাই।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন রক্ষায় সিটি কর্পোরেশনের পরিকল্পনা তুলে ধরে মেয়র বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বদ্ধভূমিগুলো নতুন প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ করা জরুরি। আপনারা জানেন ১৯৭১ সালের ১০ নভেম্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পায়োনিয়ার ফোর্স চট্টগ্রামের পাহাড়তলি অঞ্চলে এক নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়। পাঞ্জাবি লেইন, বিহারী লেইন, ওয়ারলেস কলোনিসহ বিভিন্ন স্থানে নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়ে ছিল।
এদিকে, স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে চট্টগ্রামে বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে পুলিশ, আনসার-ভিডিপি, বিএনসিসির সদস্যসহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
সকাল নয়টার দিকে নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াজ শুরু হয়। কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দিন। কুচকাওয়াজে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ, সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম ও জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম সানতু।
বেলা ১১টার দিকে সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে জাতীয় গণহত্যা দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দিন।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সাহসিকতার বার্তা দিয়েছে। দেশের ইতিহাসে যা একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত। দেশের জন্য ত্যাগের প্রেরণা দেয়। স্বাধীনতা দিবস বাংলাদেশের জনগণের সাহস, ত্যাগ ও সংগ্রামের প্রতীক, দেশের জাতীয় গৌরব ও মুক্তির ইতিহাসকে স্মরণ করার দিন।
তিনি বলেন, পঁচিশে মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ওইদিন মধ্যরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের পূর্বপরিকল্পিত ‘অপারেশন সার্চ লাইট’র নীল নকশা অনুযায়ী বাঙালি জাতির কণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দেওয়ার লক্ষ্যে ঢাকাসহ সারাদেশে নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছিল। সে সময় সারা দেশের ন্যায় চট্টগ্রামেও গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিল। এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়েছিল ঢাকা এবং চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। এটা চট্টগ্রামের জন্য গর্বের।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফরিদা খানমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মো. আহসান হাবীব পলাশ, সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. হুমায়ুন কবির, জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. সাইফুল ইসলাম সানতু ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামরুজ্জামান।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ