গতকাল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষের পর আজ সোমবারও ক্যাম্পাসে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে সুনসান নীরবতা বিরাজ করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমদ জানান, গতকালের পরিস্থিতি বিবেচনায় আজ ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে শিক্ষকদের বাস ও অন্যান্য যাতায়াত স্বাভাবিক।
সংঘর্ষটি মূলত ভাড়া বাসার দারোয়ান কর্তৃক এক ছাত্রীকে মারধরের ঘটনা কেন্দ্র করে সংঘটিত হয়। শনিবার রাত সাড়ে ১২টা থেকে রবিবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত দফায় দফায় ক্যাম্পাস সংলগ্ন জোবরা গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষে জড়ায়। এতে প্রায় ২০০০ শিক্ষার্থী আহত হন। আহতদের মধ্যে দুই শিক্ষার্থী – আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ইমতিয়াজ আহমেদ ও সমাজতত্ত্ব বিভাগের মামুন মিয়া – বর্তমানে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, দুজনের মাথায় গুরুতর আঘাত ও রক্তক্ষরণ হওয়ায় অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। মামুন মিয়ার অবস্থা কিছুটা ভালো হওয়ায় তার লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়া হতে পারে, তবে ইমতিয়াজ আহমেদ আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছেন। এছাড়া সংঘর্ষে আহত আরও ছয় শিক্ষার্থী ক্যাজুয়ালটি ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ হাতে-পায়ে আঘাত পেয়েছেন।
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের নাইমুল ইসলামকে গুরুতর অবস্থায় ন্যাশনাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে প্রেরণ করা হয়েছে।
জানা গেছে, বর্তমানে ক্যাম্পাসের মেয়ে শিক্ষার্থীরা ভিসি বাংলোর নিচে অবস্থান নিয়েছেন এবং প্রশাসনের ভূমিকার বিষয়ে প্রতিবাদ করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, প্রটোকল অনুযায়ী চবি মেডিকেল সেন্টারে ১,৫০০ জন শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিচ্ছেন, ৫০০ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এছাড়া ৫-৬ জনের অবস্থা আশংকাজনক।
প্রশাসন জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এখানে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ সার্বক্ষনিক নিরাপত্তায় নিয়োজিত আছে।
সংগঠিত সহিংসতা ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তৎপরতা অব্যাহত রাখছে।
বিডি প্রতিদিন/আশিক