দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাশে আছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। দরিদ্রতা যখন কোনো শিক্ষার্থীর চলার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় তখনই সেই বাধা দূর করতে এগিয়ে যায় বসুন্ধরা শুভসংঘ। দেশের শীর্ষ শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় তাঁদের পাশে দাঁড়ায় বসুন্ধরা শুভসংঘ। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া ২ হাজারেরও অধিক শিক্ষার্থীকে প্রতি মাসে বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে ২১ জন মেডিকেল শিক্ষার্থী। বসুন্ধরা গ্রুপ থেকে বৃত্তি পাওয়া সেই ২১ মেডিকেল শিক্ষার্থীর মধ্যে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের অনুভূতি তুলে ধরেছেন জাকারিয়া জামান-
বসুন্ধরা গ্রুপ আমার স্বপ্ন পূরণে সহায়ক হয়েছে
ঢাকা মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস অধ্যয়নরত। ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করার স্বপ্ন নিয়েই মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা। সেই লক্ষ্যেই ধাপে ধাপে এগিয়ে চলা। তবে চলার পথ সবসময় সহজ হয় না। আসে অনেক রকম বাধাবিপত্তি। সব বাধা অতিক্রমে সাহায্যকারী মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। এ ছাড়াও আমি বসুন্ধরা গ্রুপের কথা বিশেষভাবে স্মরণ করছি এবং বসুন্ধরা শুভসংঘ পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমার মনে পড়ে, যেদিন এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট দেওয়া হয় সেদিন আমার এক ভাই আমাদের বাড়িতে ফুল ও মিষ্টি নিয়ে আসেন। ভাই ও আমার হাই স্কুল একই ছিল এবং ভাই বসুন্ধরা শুভসংঘের সদস্য। আমাদের বাড়িও কাছেই অনেকটা। আমার পরিবারের আর্থিক অবস্থা এবং বাবার অসুস্থতার কথা তাঁর জানা ছিল। তিনি বসুন্ধরা শুভসংঘের মাধ্যমে আমাকে বসুন্ধরা গ্রুপ থেকে মাসিক বৃত্তির ব্যবস্থা করে দিলেন। দেখতে দেখতে দুই বছর পার হয়ে গেল। আব্বু চাষাবাদ করে কোনোরকম সংসার চালাতেন। আমার ও আমার ভাইয়ের পড়ার খরচের চিন্তায় আব্বু-আম্মু দিন কাটাতেন। বসুন্ধরা গ্রুপ আমার পাশে দাঁড়ানোর পর থেকে এখন আমার আব্বু-আম্মুকে আর চিন্তা করতে হয় না। আমিও নির্বিঘ্নে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারছি এবং স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে চলছি। বসুন্ধরা গ্রুপ আমার এ স্বপ্ন পূরণে সহায়ক হয়েছে। তাদের প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ।
স্বপ্নটা অধরাই থেকে যেত
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ভালো ফল করে যখন ভর্তির সুযোগ এলো তখন আশপাশের মানুষ খুব খুশি হলো। আমি ও আমার পরিবারও অনেক খুশি ছিলাম। কিন্তু একটা দুশ্চিন্তা আমাদের গ্রাস করে বসল, পড়তে পারব তো। এত টাকা কোথায় পাব? অনেকের সহযোগিতা নিয়ে ভর্তি হলাম। প্রতি মাসের খরচ কোথায় পাব এ চিন্তায় আমার মা ঘুমাতে পারছিলেন না। মায়ের একার আয়ে আমাদের দুই ভাইবোনের পড়ার খরচ চলে। বাবা কোনো কাজ করতে পারেন না। গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে দুধ কিনে নিয়ে বাজারে বিক্রি করেন মা। সেই আয়ে আমাদের খাওয়াদাওয়া আর পড়াশোনা চলে। বড়ভাই সরকারি একটি কলেজে ম্যাথমেটিকসে অনার্স শেষ করেছেন। তিনি টিউশনি করে নিজের পড়ার খরচ চালানোর চেষ্টা করছেন। আমার মেডিকেলে ভর্তির পর থেকে মায়ের টেনশন বেড়েই চলছিল। কীভাবে ম্যানেজ হবে এত টাকা। মা আর ভাই মিলে নিজের যে সামান্য জমি আছে তা বিক্রি করে দিতে চাইছিলেন। সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় তা করতে হয়নি। আমার পাশে দাঁড়িয়েছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে তারা আমার মেডিকেলে পড়ার খরচ বহন করছে। প্রতি মাসে আমার অ্যাকাউন্টে টাকা চলে আসে। সেই টাকায় আমার পড়াশোনা চলছে। জমি আর বিক্রি করতে হয়নি। আমার মায়ের দুশ্চিন্তা কমে গেছে। আমার এবং আমার পরিবারের সবার ইচ্ছা পূরণে বসুন্ধরা গ্রুপ এগিয়ে না এলে স্বপ্নটা অধরাই থেকে যেত। অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই বসুন্ধরা গ্রুপকে। আমার মতো হাজারো শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার স্বপ্ন পূরণ করছে তারা। বেঁচে থাকুক এমন মানবতা। দীর্ঘায়ু হোন বসুন্ধরা পরিবারের সবাই।