যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও রাজ্যের সিনসিনাতি শহর। ওহাইও নদীর তীরে অবস্থিত এই শহরের প্রাণকেন্দ্রে টিকিউএল স্টেডিয়াম। এই স্টেডিয়ামের প্রেসবক্সে পরিচয় স্থানীয় সাংবাদিক মার্শালের সঙ্গে। বাংলাদেশ থেকে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ কাভার করতে আসার খবর শুনে অভিনন্দন জানালেন। তারপরই ফুটবল বাদ দিয়ে শুরু হলো ক্রিকেটের আলোচনা। ‘তোমাদের দেশ খুব ভালো ক্রিকেট খেলে।’ মার্শালের কথা শুনে কিছুটা অবাক হতেই হলো। আমেরিকানরা ক্রিকেটের খবর রাখে কবে থেকে! গত বছর আইসিসি টি-২০ বিশ্বকাপের বেশ কয়েকটা ম্যাচ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র সেই বিশ্বকাপে সুপার এইটে খেলে বেশ সাড়া ফেলে দেয়। তারপরও যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিকেট এখনো খুব একটা জনপ্রিয় নয়। তবে এদেশে বাংলাদেশকে অনেকেই চেনে ক্রিকেট দিয়ে। এপির পুরস্কারজয়ী রিপোর্টার মার্শাল ২০২৩ সালে বিশ্বকাপ কাভার করতে গিয়েছিলেন ভারতে। সে সময় বাংলাদেশের খেলা দেখেছেন তিনি। মার্শাল সে সময় থেকে ক্রিকেটের ভক্ত। এর অবশ্য ভিন্ন কারণও আছে। সময় পেলেই তিনি বেসবল খেলেন। আমেরিকার প্রায় সবাই বেসবল-পাগল। মার্শাল বলেন, বেসবলের সঙ্গে বেশ কিছু দিক দিয়ে মিল আছে ক্রিকেটের। তবে কী আমেরিকায় দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে উঠবে ক্রিকেট? যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেট দলে বেশির ভাগই ইমিগ্রেন্ট। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা জনতার স্রোত এখানে মিশেছে। দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের অভাব নেই। তাদেরই একজন আফগানিস্তানের আবদুল করিম। তিনি গ্যাস স্টেশনে কাজ করেন। যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাস স্টেশনে গ্যাস নয়, তেল পাওয়া যায়। ওরা তেলের পাম্পকেই গ্যাস স্টেশন বলে। করিম বলছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের খবর। সাকিব, তামিম, মুশফিক, তাসকিন, লিটন, একে একে টাইগার ক্রিকেটারদের নাম বলে গেলেন তিনি। পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত গওহরের সঙ্গে মায়ামিতে দেখা। তিনিও বাংলাদেশের ক্রিকেটের কথাই বললেন।
বাংলাদেশে ক্রিকেট পাগলের অভাব নেই। নাজমুলদের ক্রিকেটের খবর এদেশে সবাই রাখে। মাঝেমধ্যে ফল খারাপ হলে অভিমানে কঠোর সমালোচনা করে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত বিশ্ব মঞ্চে ক্রিকেটই বাংলাদেশের প্রধান পরিচয়। ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে এসে বাংলাদেশের ক্রিকেটভক্ত খুঁজে পাওয়া সত্যিই এক ভিন্ন অভিজ্ঞতা।
ক্লাব বিশ্বকাপ শেষের দিকে। আজ থেকে শুরু হচ্ছে কোয়ার্টার ফাইনালের লড়াই। ফ্লুমিনেন্স-আল হিলাল এবং পালমেইরাস-চেলসি মুখোমুখি হচ্ছে শুরুতে। এরপর লড়াইয়ে নামবে পিএসজি-বায়ার্ন মিউনিখ এবং রিয়াল মাদ্রিদ-ডর্টমুন্ড। আর মাত্র সাত ম্যাচ। এরপরই জানা যাবে নতুন রূপে শুরু হওয়া ক্লাব বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়নের নাম।