পাঁচ দিনের টেস্ট সোয়া তিন দিনে শেষ। শেষ ব্যাটার হিসেবে ইবাদত হোসেন যখন সাজঘরে ফেরেন, কলম্বো টেস্টের তখনো পাঁচ সেশন বাকি। প্রথম ও দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং ব্যর্থতায় টাইগারদের হার ইনিংস ও ৭৮ রানে। নাজমুল হোসেন শান্তর টেস্ট নেতৃত্ব ছাড়ার ঘোষণায় আড়ালে পড়ে গেছে কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস গ্রাউন্ডে (এসএসজি) টাইগারদের ইনিংস হার। নাজমুল দায়িত্ব ছাড়বেন আগের রাতেও জানতেন না সতীর্থরা। জানতেন না বিসিবির কর্তাব্যক্তিরাও। নাজমুল নেতৃত্ব ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন কলম্বো টেস্ট হেরে। অধিনায়কত্ব ছাড়ার কারণ ব্যক্তিগত বলেছেন নাজমুল। তার সতীর্থদের অনেকে বলছেন, নাজমুল ওয়ানডে নেতৃত্ব কেড়ে নেওয়ার অভিমানে নেতৃত্ব ছেড়েছেন। তার টেস্ট নেতৃত্ব ছাড়ায় নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
কলম্বো আসার আগে নাজমুলের কাছ থেকে ওয়ানডে নেতৃত্ব কেড়ে নেয় বিসিবি। বিসিবির এ সিদ্ধান্তের কোনো জবাব না দিয়ে প্রকারান্তরে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। ড্রেসিংরুমে তিন অধিনায়কের বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি, ‘আমার ব্যক্তিগত মতামত, তিন ফরম্যাটে তিন অধিনায়ক থাকা বুদ্ধিমানের কাজ নয়।’ ইনিংস হেরে টেস্ট নেতৃত্ব ছাড়ার বিষয়ে মিডিয়াকে নাজমুল বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি। টেস্ট সংস্করণে আর এই দায়িত্ব পালন করতে চাই না। আমি সবাইকে পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, এটা ব্যক্তিগত কোনো কিছু নয়, পুরোপুরি দলের ভালোর জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি মনে করি, এটাতে দলের ভালো কিছুই হবে।’ বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন আরেকটু সময় নিতে পারত নাজমুল, ‘আমরা তো পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে গেছি ওখানে। টেস্ট শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যদি সে পদত্যাগ না করত... এগুলো টিমের ওপর একটা রিফ্লেক্ট হয়। দেশে হলে একটা কথা, বিদেশে...। আর ও তো অন্যান্য সংস্করণেও দলে আছে। আমার কাছে মনে হয়, এটা একজন অধিনায়ক হিসেবে আরেকটু চিন্তা করতে পারত সে। দলটা তো আগে।’
গলে দাপুটে ক্রিকেট খেলে ড্র করেছিল বাংলাদেশ। কলম্বোতে বিপরীত চিত্র দেখা গেছে টাইগার ব্যাটিংয়ে। দুই ইনিংসে পুরোপুরি ব্যাটিং ব্যর্থতার চিত্র ছিল প্রকট। শতরানের কোনো জুটি নেই। সর্বোচ্চ জুটি ৬৭ রানের। দুই ইনিংসে একটিও হাফ সেঞ্চুরি নেই। সর্বোচ্চ ৪৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন সাদমান ইসলাম। অবশ্য এই হারের টেস্টে নতুন একটি রেকর্ড গড়েছেন লিটন দাস। উইকেটরক্ষক হিসেবে লিটন টপকে গেছেন মুশফিকুর রহিমকে। বাংলাদেশের দশম ক্রিকেটার হিসেবে ৫০ টেস্ট খেলার ক্লাবে নাম লিখেছেন লিটন। ক্যাচ ও স্ট্যাম্পিং মিলিয়ে তিনি এখন সবার ওপরে। ৫০ টেস্টে তার শিকার ৯৯ ক্যাচ ও ১৫ স্ট্যাম্পিং। আগের রেকর্ড ছিল মুশফিকের, ১১৩টি। ক্যাচ ৯৮ ও স্ট্যাম্পিং ১৫টি। টেস্ট হারের ব্যাখ্যায় নাজমুল বলেন, ‘আমার মনে হয় প্রথম টেস্টটি আমরা যেভাবে ডমিনেট করে খেললাম, এই টেস্টটা আরেকটু ভালো খেলতে পারতাম। যদি ডমিনেট করে খেলতে পারতাম, তাহলে উন্নতির জায়গাটা আমরা দেখতে পেতাম।’