পাঁচ নেতার কক্সবাজার সফর ইস্যুতে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সপ্তম সাধারণ সভা। বুধবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সভায় পাঁচ নেতার কক্সবাজার সফর ও শোকজের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ঘটনা নিয়ে দেওয়া পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। সভায় কারণ দর্শানোর ব্যক্তিগত চিঠি অনলাইনে প্রকাশ করারও সমালোচনা হয়। সভায় প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে কক্সবাজার ইস্যু নিয়ে কথা হয়। এসময় ‘জুলাই গণ অভ্যুত্থানের’ প্রথম বর্ষপূর্তির দিনে দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের ওই সফরের সমালোচনা করেন কেন্দ্রীয় কমিটির অনেক সদস্য। তারা ফেসবুকে শোকজের জবাব দেওয়া, দল এবং আহ্বায়ক, সদস্য সচিবকে নিয়ে প্রশ্ন তোলারও নিন্দা জানান। গুরুত্বপূর্ণ এ সময়ে ব্যক্তিগত সফরে কক্সবাজারে যাওয়াকে ভালো সিদ্ধান্ত নয় বলে মন্তব্য করেন অনেকে। জবাবে হাসনাত-সারজিসরাও তাদের ব্যাখ্যা জানান। জানা যায়, বুধবার বিকাল ৫টা থেকে শুরু হয়ে রাত ৩টা পর্যন্ত চলার পর এনসিপির সপ্তম সাধারণ সভা মুলতবি করা হয়। গতকাল বিকাল ৬টা থেকে পুনরায় সভা শুরু হয়। দলীয় সূত্র জানায়, সভায় নতুন বন্দোবস্তের জন্য কর্মসূচি নির্ধারণ, সরকার ঘোষিত জুলাই ঘোষণাপত্রে অসন্তোষ নিয়েও আলোচনা করা হয়। সর্বশেষ জুলাই সনদ নিয়ে ব্যাপক মতামত আসে নেতাদের কাছ থেকে। আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন নিয়েও সভায় আলোচনা হয়। তবে নির্বাচনে যে পরিমাণ আর্থিক ও সাংগঠনিক শক্তিমত্তা থাকা প্রয়োজন তার ঘাটতি থাকায় এই ইস্যুতে আলোচনা বেশি দূর এগোয়নি বলে জানান দলের নেতারা। সভায় মাসব্যাপী ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ নিয়ে আলোচনা হয়। মূল্যায়ন করা হয় নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণ এবং কোথায় কোথায় ঘাটতি ছিল সেসব বিষয়ে।
এ ছাড়া নৈতিক স্খলনের অভিযোগে সারোয়ার তুষার এবং জেলা প্রশাসক নিয়োগে হস্তক্ষেপ ও কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগে গাজী সালাউদ্দিন তানভীরের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয় সভায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, ‘দলে অন্যান্য এজেন্ডার মধ্যে শৃঙ্খলা কমিটির বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। সভায় কারণ দর্শানোর ব্যক্তিগত চিঠি অনলাইনে প্রকাশ করারও সমালোচনা হয়। আর প্রথমদিকে শোকজ করা গাজী সালাউদ্দিন তানভীর ও সারোয়ার তুষারের বিষয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ দলের শৃঙ্খলা কমিটির প্রধান আবদুল্লাহ আল-আমিন বলেন, ‘দলের সভায় শৃঙ্খলার সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সব ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
বৈঠকে দলের আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারাসহ আহ্বায়ক কমিটির সদস্যরা বৈঠকে অংশ নেন।