উত্তর সাগরের ঢেউ নিয়ে বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরেই অনুসন্ধান চালিয়ে আসছেন। এক সময় নাবিকদের কাছে কেবল সমুদ্রের গল্প হিসেবে পরিচিত ছিল “রগ ওয়েভ” বা হঠাৎ তৈরি হওয়া বিশাল ঢেউ। যা মুহূর্তের মধ্যে জাহাজ ও সমুদ্রের স্থাপনাগুলোর জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। এ ধরনের ঢেউ ২০ মিটার বা তারও বেশি উচ্চতায় উঠতে পারে, যা আশেপাশের ঢেউয়ের দ্বিগুণেরও বেশি।
সম্প্রতি নেচার সায়েন্টিফিক রিপোর্টসে প্রকাশিত এক আন্তর্জাতিক গবেষণায় উঠে এসেছে, এসব ঢেউ মোটেই রহস্যময় নয়। ২০০৩ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত নরওয়ের উপকূলের কাছে একোফিস্ক তেলক্ষেত্রের প্ল্যাটফর্মে স্থাপিত লেজার যন্ত্রে সংগৃহীত প্রায় ২৭ হাজার ৫০০টি অর্ধ ঘণ্টার ঢেউয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন রগ ওয়েভ তৈরি হয় মূলত কনস্ট্রাকটিভ ইন্টারফেরেন্স নামের প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায়।
গবেষক দলের নেতৃত্বে থাকা বিশেষজ্ঞরা জানান, সমুদ্রে বিভিন্ন দিক থেকে আসা ঢেউ যখন একই সময় ও জায়গায় মিলে যায়, তখন তাদের চূড়াগুলো একে অপরের ওপর জমে এক বিশাল ঢেউ তৈরি করে। এই প্রক্রিয়া কয়েক সেকেন্ড থেকে এক মিনিটের মধ্যে ঘটে যায়। তত্ত্বটি পরিচিত কোয়াজি-ডিটারমিনিজম নামে। যাতে বলা হয়েছে বড় ঢেউয়ের চারপাশে নির্দিষ্ট ঢেউয়ের বিন্যাস দেখা যায়, যা চিহ্নিত করা সম্ভব।
গবেষকরা উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন, ২০২৩ সালের ২৪ নভেম্বর উত্তর সাগরে এক ঝড়ে একোফিস্ক প্ল্যাটফর্মে ধরা পড়ে প্রায় ১৭ মিটার উঁচু এক রগ ওয়েভ। বিশ্লেষণে দেখা যায়, এটি তৈরি হয়েছিল ছোট ছোট ঢেউয়ের একাধিকবার স্তূপাকারের ফলেই।
সূত্র: সায়েন্স এলার্ট
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল