নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা শনির ৮টি মাঝারি আকারের উপগ্রহে কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO₂) শনাক্ত করেছেন। এই উপগ্রহগুলো হলো: মিমাস, এনসেলাডাস, টেথিস, ডিওনি, রিয়া, হাইপেরিওন, ইয়াপেটাস এবং ফিবি।
গবেষণায় দেখা গেছে, শনির এই উপগ্রহগুলোতে অন্তত চার ধরনের ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিতে CO₂ আটকে থাকে। টেলিস্কোপের তরঙ্গদৈর্ঘ্য বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া যায়। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, শনির উপগ্রহগুলো এমন একটি আদর্শ গবেষণাগার—যেখানে একই রকম পরিবেশে নানা CO₂ এর উৎস ও ধরন পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব।
গবেষণা অনুযায়ী, ভেতরের দিকে অবস্থিত উপগ্রহ ডিওনি ও রিয়ায় পাওয়া CO₂ মূলত শনির ‘ই-রিং’ থেকে আসা বরফ ও তাদের পেছনের অন্ধকারময় অংশে থাকা পদার্থের সঙ্গে যুক্ত।
অন্যদিকে, বাইরের উপগ্রহ যেমন ফিবিতে CO₂ তৈরি হয় জৈব পদার্থের বিকিরণের মাধ্যমে। পরে সেই CO₂ গ্যাস গিয়ে জমে ইয়াপেটাস ও হাইপেরিওনের অন্ধকার অঞ্চলগুলোতে। এই দুই উপগ্রহের বরফের মধ্যেও CO₂ আটকে থাকতে দেখা গেছে।
গবেষণায় আরও বলা হয়, শনির উপগ্রহগুলোর CO₂ অনুসন্ধান পৃথিবী থেকে দূরের বরফাচ্ছাদিত উপগ্রহগুলোর গবেষণার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। অনেক ক্ষেত্রে শনির উপগ্রহগুলোর সঙ্গে বৃহস্পতির উপগ্রহগুলোর তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা যেতে পারে।
এই গবেষণার উদ্দেশ্য হলো—গ্রহ ও উপগ্রহে কীভাবে CO₂ তৈরি হয় ও ধরে রাখা হয়, তা বোঝা। পাশাপাশি এর মাধ্যমে বোঝা যেতে পারে এসব গ্রহ বা উপগ্রহ জীবনের উপযোগী কি না।
বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, CO₂ এর উৎস ও আটকে থাকার ধরন আরও পরিষ্কারভাবে জানতে হলে গবেষণাগারে পরীক্ষার প্রয়োজন আছে। বিশেষ করে সৌরজগতের বাইরের অঞ্চলে থাকা জটিল বরফযুক্ত উপাদানগুলোর CO₂সম্পর্কিত আচরণ বুঝতে আরও গবেষণা দরকার।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল